খুলনা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে খুলনা। আগুন দেওয়া হয়েছে দুই এমপির বাড়ি।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে তাদের শেরে বাংলা রোডস্থ বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা রোববার দুপুর ১২টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হন। পরে আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে সেখান থেকে গিয়ে মহানগরীর শেরে বাংলা রোড়ের প্রধানমন্ত্রীর চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় বাড়ির ভেতর থেকে গুলিবর্ষণ করলে আন্দোলনকারীরা ঢুকে আগুন লাগিয়ে দেয়।
ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় তাদের বাড়ির সামনে কোনো পুলিশ সদস্য বা নেতাকর্মী ছিলেন না। একপর্যায়ে তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং ভবনের প্রতিটি তলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পড়ে স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বিকাল পৌনে তিনটার দিকে আগুন নিভে গেলে বেশ কিছু পুলিশ ও এপিবিএনের সদস্যরা বাড়িতে আসে।
পরে যুবলীগের কিছুইনেতাকর্মীকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাড়ির সামনে আসতে দেখা যায় । তবে কিছুক্ষণ পর তারাও চলে যায়।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের এই বাড়িতে বর্তমানে শেখ সোহেল ও তার ভাই শেখ রুবেলই থাকেন। তাদের অপর দুই ভাই সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল ঢাকায় থাকেন। তবে বাড়িতে হামলা অগ্নিসংযোগকালে তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না।
আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর প্রসঙ্গে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল-সমাবেশ করছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পিকচার প্যালেস মোড় থেকে আন্দোলনকারীরা যেতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও আগুন দেয় এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা জেলা পরিষদে হামলা করে।
এ সময় জেলা পরিষদের সামনের রাখা যমুনা টিভির সাংবাদিক প্রবীর বিশ্বাসের মোটরসাইকেলসহ পাঁচটি মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে তারা খুলনা প্রেসক্লাবে হামলা করে।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা,মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহ জালাল সুজন ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ মো. আবু হানিফ, জেলা যুবলীগের সভাপতি চৌধুরী রায়হান ফরিদ ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট কণিকা সাহা।
এদের মধ্যে বাবুল রানা ও শাহজালাল সুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা দুজনই খুলনা মেডিকেল কলেজের আইসিইউ তে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে সড়কে সড়কে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগে খুলনায় ছাত্র-নাগরিকের ঢল নেমেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
এমআরএম/এসএএইচ