ঢাকা, বুধবার, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ২১ আগস্ট ২০২৪, ১৫ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

ভরা মৌসুমে ধরা পড়ছে না ইলিশ, উঠছে না জেলেদের খরচও

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
ভরা মৌসুমে ধরা পড়ছে না ইলিশ, উঠছে না জেলেদের খরচও

লক্ষ্মীপুর: চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। জুলাইয়ের শেষভাগ থেকে আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাস ইলিশের ভরপুর মৌসুম থাকে।

কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মৌসুমেও জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে অনেকে জেলের মাছ শিকারের খরচও উঠছে না। বাজারেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে জেলার কমলনগর উপজেলা নাছিরগঞ্জ মাছ ঘাটে গিয়ে দেখা যায় ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয়ের চিত্র। মেঘনা নদী থেকে মাছ শিকার করে জেলেরা নদীর তীরবর্তী এ ঘাটে মাছ নিয়ে আসেন বিক্রির উদ্দেশে। আর ব্যাপারীর 'ডাক' এর মাধ্যমে পাইকারি দরে ইলিশ কিনে খোলা বাজারে বিক্রি করেন।

মাছ ঘাটেই চড়া দামে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় হতে দেখা গেছে।

ঘাটে মাছ বিক্রি করতে আসা জেলেরা দাবি করেন, যে পরিমাণ মাছ তাদের জালে ধরা পড়তেছে, তা বিক্রি করে অনেক সময় খচরও উঠছে না। খরচ বেশি হওয়ার পেছনে তারা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিকেই দায়ী করেছেন।

অন্যদিকে ঘাটের আড়তদার এবং পাইকারি বেপারীদের দাবি, মাছের পরিমাণ কম হওয়ায় দাম বেশি।

নাছিরগঞ্জ মাছঘাট এলাকার জেলে মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার তারা ৫ জন মিলে নৌকা নিয়ে মেঘনায় মাছ শিকার করেছেন। মাছ শিকারে নৌকার জ্বালানি, জেলেদের খাবার এবং আনুষঙ্গিক মিলে খরচ হয়েছে সাত হাজার টাকা। কিন্তু তাদের জালে যে মাছ ধরা পড়েছে, ওই মাছ ঘাটে এনে বিক্রি করেছেন পাঁচ হাজার টাকার মতো। তাই মাছ বিক্রি করেও তাদের খরচ উঠেনি।

তিনি জানান, কখনো কখনো বড় আকারের মাছ ধরা পড়লে খরচ ওঠে লাভও হয়।  

রহমান নামে আরেক জেলে বলেন, নৌকা নিয়ে নদীতে নামলে যে খরচ হয়, অনেক সময় সে খরচও ওঠে না। একটি ছোট নৌকাতে ৪ থেকে ৫ জন জেলে কাজ করে। তাদের খরচ আছে, সংসারের খরচ আছে। নদীতে মাছ নেই, সংসার চলবে কেমনে?

মাছ ঘাটের বাক্সগুলোতে দেখা গেছে, ছোট জাটকা আকারের ইলিশ মাছের হালি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে পাঁচশ থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকায়। বড় বড় আকারের মাছে দামও আকাশচুম্বী।

এক কেজির চেয়েও কম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। ঘাটে সাড়ে নয়শ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ মাছ ১৪২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর সাড়ে তিন কেজি ওজনের পাঁচটি মাছ পাইকারি বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার সাতশ টাকায়৷

মাছঘাটের আড়তদার সোহাগ ব্যাপারী বলেন, মাছের এখন ভরা মৌসুম যাচ্ছে, কিন্তু নদীতে মাছ নেই। কয়েক বছর ধরে এমন অবস্থা চলছে। মাছ কম হওয়ার কারণে দামও বেশি। জেলেদের জালে বেশি পরিমাণে মাছ ধরা পড়লে দাম কিছুটা ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আসতো।

তিনি জানান, সাগরের বা গভীর সমুদ্রের ইলিশের চেয়েও মেঘনার ইলিশের দাম কিছুটা বেশি।

পাইকারি ব্যাপারী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, বাজারে মাছের চাহিদার থেকেও ঘাটে মাছ কম। তাই বেশি দামেই মাছ কিনতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।