মৌলভীবাজার: টানা তিন দিনের অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজার জেলার মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মৌলভীবাজার শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা মনু নদের পানি শহরে প্রবেশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জেলার নদ-নদীর পানির সর্বশেষ আপডেটে বলা হয়েছে, জেলার মনু নদের রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টসহ, চাঁদনীঘাট পয়েন্ট, ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্ট, কুশিয়ারা নদী, জুড়ী নদীর ভবানীপুর পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মনু নদের রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মনু নদের চাঁদনীঘাট পয়েন্ট পানি বিপৎসীমার ১১৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপৎসীমার ৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং জুড়ী নদীর ভবানীপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৯০ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপচে পড়া পানি প্রবল স্রোতে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। জেলার কয়েকটি জায়গায় নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো বাসিন্দা। কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, জুড়ীসহ নানা জায়গায় বিপর্যস্ত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের সেন্ট্রাল রোড ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বুধবার রাতে গাড়ি চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা শহরের বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন।
মনু নদের কুলাউড়া, রাজনগর ও সদর উপজেলার অংশে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিরক্ষা বাঁধে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া অব্যাহতভাবে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে আতঙ্কে আছেন নদীপাড়ের মানুষ।
জেলার সব কটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার অবনতি হয়েছে সব উপজেলায়। কুশিয়ারা, মনু, ধলাই ও জুড়ী নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই ও মনু নদের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলার বেশ কিছু রাস্তার ওপর পানি এসে সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। জেলার ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। তলিয়ে গেছে পাকা আউশ ধান, আমন ধানের চারা ও মাছের খামার।
মুষলধারে বৃষ্টির পানি ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের কারণে গতকাল ধলাই নদ বিভিন্ন প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে কমলগঞ্জ উপজেলা প্লাবিত হয়। রাতে কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙে তলিয়ে যায় বিভিন্ন সড়ক। পানিবন্দি হয়ে অনেকই আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। সব কটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো মেরামতের কাজ চলছে। এ ছাড়া জেলা শহরের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের কাজ চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
বিবিবি/এমজেএফ