ঢাকা, শনিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়ায় আন্দোলনে নিহত তিনজনের পরিবারের পাশে বসুন্ধরা শুভসংঘ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪
কুষ্টিয়ায় আন্দোলনে নিহত তিনজনের পরিবারের পাশে বসুন্ধরা শুভসংঘ

কুষ্টিয়া: ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে জুলাইয়ের শেষ দিকে কুষ্টিয়ায়ও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ৩ আগস্ট ছাত্রদের আন্দোলন গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়।

কুষ্টিয়াতে সব শ্রেণি-পেশা এবং বয়সের মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দেয়। পুলিশ ওই সময় আন্দোলন ঠেকাতে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে লাঠিপেটা, টিয়ার গ্যাস শেল ও গুলি শুরু করে।

৪ আগস্টও একই পরিস্থিতি বিরাজমান থাকার পর ৫ আগষ্ট সকালে কারফিউ ভেঙে ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে পড়ে। শহরজুড়ে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি করা শুরু করে পুলিশ। এ সময় কুষ্টিয়ায় সদর থানার সামনে গুলিতে প্রথম নিহত হয় দরিদ্র চা বিক্রেতা শিশু আব্দুল্লাহ (১৫)। শহরের চরথানাপাড়া বস্তির লোকমান হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ শহরের ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে তার বাবার চায়ের দোকানে আসার পথে থানার সামনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়।

দুপুরের দিকে আন্দোলন শহরের সবখানে ছড়িয়ে পড়লে কুষ্টিয়া সদর মডেল থানা অভিমুখে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার ঢল নামে। পুলিশ বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়তে থাকলে অন্যদের সঙ্গে রংমিস্ত্রি আশরাফুল ইসলাম ওরফে আশরাফ (৩০) থানার অদূরে আদ-দ্বীন হাসপাতালের সামনে এবং দরিদ্র দোকান কর্মচারী সুরুজ আলী (৪০) থানার সামনে প্রাণ হারান। ওই দিন কুষ্টিয়া শহরে মোট সাতজন পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
বসুন্ধরা শুভসংঘ কুষ্টিয়ার সদস্যরা নিহতদের পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন তিনজনের পরিবারের অবস্থা খবুই নাজুক।

সেই বিবেচনায় বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় কুষ্টিয়া শুভসংঘের সদস্যরা নিহত তিনজনের স্বজনদের হাতে এক মাসের খাদ্য সহায়তা তুলে দেন। চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচসহ প্রয়োজনীয় সব উপকরণ ছিল এই সহায়তার মধ্যে।

বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য উপহার পেয়ে শিশু আব্দুল্লাহর বাবা লোকমান হোসেন, আশরাফুল ইসলাম আশরাফের স্ত্রী লাবণী আক্তার ইতি এবং সোনার দোকানের কর্মচারী সুরুজ আলীর মা রোখসানা খাতুন ও স্ত্রী ফাহিমা আক্তার কিছুটা স্বস্তি ফিরে পান। আবদুল্লা ছিল চা বিক্রেতা লোকমান হোসেনের একমাত্র ছেলে। বাবাকে চা বিক্রিতে সহায়তা করত সে।

ছেলে হারানোর শোক নিয়েই এখনো চা বিক্রি করেন লোকমান। রংমিস্ত্রি আশরাফের স্ত্রী লাবণী শঙ্কিত তার দুই সন্তান নিয়ে। বাবা ছাড়া কে দেখবে তাদের। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী দোকান কর্মচারী সুরুজ আলীর স্ত্রী ফাহিমাও তাঁর দুই সন্তান ১০ বছরের সিফাত ও সাত বছরের উর্মির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। বাবা ছাড়া দরিদ্র এই সন্তান দুটির ভবিষ্যৎ কী হবে সেই চিন্তায় এখন দিন কাটছে ফাহিমার। তিনটি পরিবারকেই ভবিষ্যতে পাশে থাকার আশ্বাস দেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বন্ধুরা। তাঁদের সন্তানদের লেখাপড়ার বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় এই পরিবারগুলোর পাশে থাকবে বলে জানান আয়োজকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।