নরসিংদী: নরসিংদীর শিবপুরে বর সাব্বির হোসেন সরকার ১৭৫ জন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে এসেছিলেন পছন্দের পাত্রীকে। কনের বাড়ির লোকজন ১৭৫ জন বরযাত্রী আপ্যায়ন করে খাওয়া-দাওয়া করান।
গত শুক্রবার ( ২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের কালুয়ারকান্দ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার ৬ দিন পর বৃহস্পতিবার কনের মা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের কাছে অভিযোগ দিলে বিষয়টি সবার সামনে আসে।
বিয়ের বর ছিলেন শিবপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ঘাসিরদিয়া গ্রামের আলতাব হোসেন সরকারের ছেলে সাব্বির হোসেন সরকার (৩০)।
কনের মা সেলিনা বেগম জানান, পারিবারিকভাবে আলোচনা করে এক সপ্তাহ আগে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়েছে। বিয়ের দিন ১০০ বরযাত্রী নিয়ে আসার কথা থাকলেও বর তার আত্মীয়-স্বজনসহ ১৭৫ জন বরযাত্রী নিয়ে আসেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে বিয়ের কাবিননামায় স্বাক্ষর করবে এমন সময় বরের বড় বোন সাবিনা ও ছোট বোন নিপা বলে কনের আগে বিয়ে হয়েছে দুই বাচ্চা রয়েছে এ বিয়ে হবে না। কনের গায়ের নতুন জামা-কাপড় জোর করে খুলে নিয়ে বিয়ের আসর থেকে বরের লোকজন বরকে নিয়ে চলে যান। বিয়ে হয়েছে এটা জানত তারা, কিন্তু দুই বাচ্চা আছে এটা মিথ্যা কথা বলছে। এ বিয়ে উপলক্ষে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খাওয়া-দাওয়া ও ডেকোরেশন বাবদ খরচ হয়। আমি অনেক চেষ্টা করেছি তাদের বুঝানোর কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনতে নারাজ।
কনে রত্না বেগম বলেন, আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমি বরকে আমার আগের বিয়ের কথা জানিয়েছি। তখন সে বলেছে এটা বাইরের কাউকে বলার দরকার নেই। আমাদের পরিবারের মধ্যেই যেন বিষয়টা থাকে। কিন্তু বিয়ের দিন তারা অপবাদ দিয়ে বিয়ের আসর থেকে চলে গেছে। আমি তখন এ ঘটনায় অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
বরের বড় বোন সাবিনা বলেন, মেয়ের পরিবার আগে বিয়ে যে হয়েছে তা আমাদের জানায়নি। শুধু জানিয়েছে মেয়ের একবার বিয়ে ভেঙে গেছে আর তার কোনো ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। কিন্তু আমরা পরে জানতে পারি কনের বিয়ে হয়েছিল।
আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান সরকার বলেন, বরপক্ষ বিয়ের দিন পাশের বাড়ি থেকে কনের আগের বিয়ের খবর জানতে পারে। ছেলের এটা প্রথম বিয়ে, তাই বরপক্ষ বিয়ে না করে চলে আসে। আমি বরপক্ষের লোকজনকে বলছিলাম বসে মীমাংসা করতে কিন্তু তারা আসেনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিবপুরের ছাত্র আসিফ, রাকিব সুমনা ও সাহেদ তাদের কাছে কনের মা অভিযোগ করলে তারা বরের বাড়িতে গেলে বর ও বরের বাবাকে না পেয়ে বরের মামার সঙ্গে কথা বলেন। পরে আগামী রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সবার উপস্থিতিতে বসে মীমাংসা করা হবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আফজাল হোসেন বলেন, এ ঘটনা আমরা মৌখিকভাবে জানতে পেরেছি। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দুই পক্ষের সঙ্গে বসে সমাধান করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪
জেএইচ