ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, ৩৬ জন আদালতে

অতিথি করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা) | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৪
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, ৩৬ জন আদালতে

ঢাকা: আশুলিয়ায় যৌথ বাহিনীর ওপর হামলা, গাড়ি ভাংচুর, সরকারি কাজে বাধা ও কারখানায় অনুপ্রবেশ করে লুটপাটের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৩৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তুলেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে শিল্পপুলিশ-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সাফওয়ান (২১), মো. ওমর ফারুক (২৬), মো. মিনাজুল আরেফিন (২৬), মো. মাসুদ রানা (২৫), অশোক কুমার সিংহ (৪২), মো. অপু (২৫), মো. বাদল হোসেন (৪৪), আপন চন্দ্র (২০), মো. মাজাহারুল ইসলাম (২২), আশিকুর রহমান (৪০), মো. নাছির উদ্দিন (২৬), মো. হাসান আলী (২৯), মো. সাইদুল ইসলাম (২১), মো. মনোয়ার হোসেন সুজন (৩২), আ. জলিল (১৯), মো. আজিজুল ইসলাম (৪২), মো. মামুন (১৯), মো. রামিম (১৯), মো. কফিল রানা (৩২), মো. শাহাদাত হোসেন (২০), মো. হাসানুর রহমান (২১), মো. নাইমুল ইসলাম (২৪), মো. আল আমিন (৩০), আল ইমরান (২৯), আবু তৈয়ব (৩০), মো. সুজিত (২৮), মো. ইদ্রিস (২৩), জাহিদুল ইসলাম (২২), মো. ওমর ফারুক (৩১), মো. শাকিল হোসেন (২৫), মো. মুরাদ হোসেন (৩১), মো. সুমন (২২), মো. গোলাম রাব্বী (২৪), আ. রাকিব (২৪), আল আমিন (২৯), ও মো. আনিস খন্দকার (২৪)। গ্রেপ্তাররা বেশিরভাগই শ্রমিক বলে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, সোমবার আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় মণ্ডল নিটওয়্যার গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় একটি ত্রি-পক্ষীয় বৈঠক হয়। এ সময় শ্রমিকরা দুই শ্রমিককে গুম ও দুজনকে ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। গুম ও ধর্ষণের গুজবের খবরে পাশের ন্যাচারাল ডেনিমস ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা অযৌক্তিক বিভিন্ন দাবিতে ফ্যাক্টরিতে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করে। পরে কর্তৃপক্ষ দুটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে সব শ্রমিক একযোগে বের হয়ে আসে।

এছাড়া ম্যাঙ্গোটেক্স নামে একটি কারখানার কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক বহিরাগতদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে টঙ্গাবাড়ি এলাকায় মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে অবস্থান নেয়। পরে তারা মন্ডল গার্মেন্টসের ভেতরে শ্রমিকদের যৌথ বাহিনী আটকে রেখেছে বলে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরে যৌথ বাহিনীর কর্মকর্তারা তাদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক ও বহিরাগতরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোটা ও রডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম (শিল্প পুলিশ-১) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আক্তারুজ্জামানসহ (র‍্যাব-৪ ) ১০-১২ জন যৌথ বাহিনীর সদস্য গুরুতর আহত হন। সেনাবাহিনীর পাঁচটি, র‍্যাবের দুটি ও শিল্প পুলিশের একটিসহ আটটি গাড়িতে ভাংচুর চালায় শ্রমিকরা। এ ঘটনায় ৩৬ জনকে প্রথমে আটক করা হয়।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ১২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে শিল্পপুলিশ। এ ঘটনায় ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার আশুলিয়ায় জিরাবোর টঙ্গাবাড়ি এলাকায় শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় কাউসার হোসেন খাঁন নামে এক শ্রমিক  গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ছয় শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।