ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না গুলিবিদ্ধ জাহিদুল 

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২৪
অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না গুলিবিদ্ধ জাহিদুল 

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ জাহিদুল ইসলাম জিহাদ (২২) অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। শরীরে চারটি গুলির গুরুতর ক্ষত নিয়ে চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন পার করছেন তিনি।

 

৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের বিজয় মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে পুলিশের অতর্কিত হামলায় গুলিবিদ্ধ হন জিহাদ। পরে তাকে উদ্ধার করে তিনটি ভিন্ন হাসপাতাল ঘুরিয়ে সিএমএইচ ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২ মাস চিকিৎসা শেষে ডাক্তাররা তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

কিন্তু বাড়িতে এলেও দরিদ্র মা-বাবার অর্থাভাবে চিকিৎসা নিতে না পারায় ৩ অক্টোবর থেকে জিহাদ মুমূর্ষু অবস্থায় ঘরে মধ্যে বন্দি জীবনযাপন করছেন।

জানা গেছে, জিহাদ ওই উপজেলার আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি ২০২২ সালে দুপচাচিয়া কামরুজ্জামান ডিগ্রি কলেজের কারিগরি শাখা থেকে জিপিএ ৪.৫ নিয়ে পাশ করে ওই কলেজেই ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হলেও সংসারের টানা পোড়েনে ঢাকার সাইন বোর্ড এলাকায় একটি প্যাকেজিং কারখানায় চাকরি শুরু করেন। নিজের থাকা খাওয়া শেষে কিছু টাকা বাড়িতে পাঠালে দুই ভাইকে নিয়ে মা-বাবা কোনো মতে সংসার চালাতেন। ঢাকায় কাজ করার পাশাপাশি অনার্স শেষ করে ছেলেকে সরকারি চাকুরি করানোর ইচ্ছে ছিল তাদের।

জিহাদের বাবা আব্দুল জলিল বলেন, স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে আমার সংসার। অভাবের এই সংসারে কিছুটা স্বস্তি দিতে ছেলে গিয়েছিল ঢাকা শহরে। তার চাকরির বয়স মাত্র ৫-৬ মাস হবে। গত ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে জিহাদ। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না তাকে।

জিহাদের মা হাসনা বেগম কেঁদে কেঁদে বলেন, ইচ্ছে ছিল ছেলে লেখাপড়া করে সরকারি চাকরি করবে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, অভাব মেটাতে ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে এখন গুরুতর আহত হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে।  

এলাকাবাসী জানায়, ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে গুরুতর আহত হওয়ার পর ঢাকার একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে জিহাদকে বাড়িতে পাঠানো হয়। এরপর কোনো রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন কিংবা সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে তার কোনো খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি বলে জানায় প্রতিবেশীরা। অসহায় পরিবারটির পাশে সহযোগিতা হাত বাড়ানোর দাবি এলাকাবাসীর।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুম বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জিহাদকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জয়পুরহাট জেলায় মোট ৩৭ জন ছাত্রসহ কর্মজীবী আহত এবং পাঁচজন নিহত হন। এরমধ্যে ক্ষেতলাল উপজেলায় জাহিদুল ইসলাম জিহাদসহ পাঁচজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।