ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
যশোরে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

যশোর: যশোরের ঝিকরগাছায় পিয়াল হাসান (২৮) নামে এক যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।  

শনিবার (০৯ নভেম্বর) ঝিকরগাছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত পিয়াল হাসান স্থানীয় মোবারকপুর বিশ্বাসপাড়ার কিতাব আলীর ছেলে এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুণ বলয়ের কর্মী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনসহ ১০টি মামলা রয়েছে।

নিহত পিয়ারের স্বজন ও পুলিশ জানায়, যুবদলের রাজনীতির পাশাপাশি পিয়াল ঝিকরগাছা বাজারে মুরগির ব্যবসা করতেন। গত ৫ আগস্ট বাজারে নিজ দলের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর নুরুজ্জামান বাবুর অনুসারী পৌর ছাত্রদলের সভাপতি শামীম রেজার সঙ্গে তার বিরোধ হয়। সেই বিরোধের জেরে কাউন্সিলর বাবু, পৌর ছাত্রদল নেতা শামীম রেজাসহ কয়েকজন পিয়ালের দোকান ভাঙচুর করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিয়ালও শামীম রেজার বাবা কামরুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করেন। সেই মামলায় সম্প্রতি পিয়াল আত্মসমর্পণ করে কারাভোগ করেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফেরেন। ওই রাতেই ছাত্রদল নেতা শামীম রেজা পিয়ালের বাড়িতে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (০৯ নভেম্বর) আবারও পিয়ালের দোকানে আসেন কাউন্সিলর বাবু, শামীমসহ কয়েকজন। সেখানে অপরাধের কারণে অনুতপ্ত হয়ে শামীম রেজার কাছে ক্ষমা চান পিয়াল। কিন্তু সেখানে পিয়ালকে মাফ না করে কুপিয়ে আহত করেন শামীম ও তার সহযোগীরা। এরপর প্রাণ বাঁচাতে পিয়াল বাজার থেকে পালালে তাকে উদ্দেশ্য করে বোমা নিক্ষেপ করেন। বোমা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি আবার পালিয়ে স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতরে আশ্রয় নেন। সেখানে একটি ভবনের বারান্দায় পিয়ালকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান কাউন্সিলর বাবু, শামীম ও তার সহযোগীরা। এরপর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহত পিয়ালের ছোট ভাই সুমন হাসান বলেন, ‘আমার ভাই কয়েক দফা তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েও মাফ পেল না। আমার ভাইকে তারা কুপিয়ে হত্যা করেছেন। মৃত্যুর ভয়ে বন্ধ স্কুলে লুকালে তারা পিয়ালকে খুঁজে বের করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। ’

স্থানীয়রা জানান, নিহত পিয়াল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুণের কর্মী এবং অভিযুক্তরা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোর্তজা এলাহী টিপুর অনুসারী। নিজেদের আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধ নিয়ে গত ৫ আগস্ট ওই হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল বলে স্থানীয়রা জানান।

তবে নিহত পিয়াল ও অভিযুক্তরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও এ ঘটনা পূর্ব বিরোধের জের ধরে সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে সহকারী পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান।  

তিনি বলেন, ‘নিহত পিয়ালের নামে বিস্ফোরক আইনের মামলাসহ ১০টি মামলা রয়েছে। এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের পুলিশ চিহ্নিত করতে পেরেছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১০৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
ইউজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।