ঢাকা: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ যে দেশ পেয়েছে, সেই দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট যেন ফিরে না আসে এমন প্রত্যাশা করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) কাদের গণি চৌধুরী।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটির কনফারেন্স হলে দৈনিক কালের কণ্ঠ আয়োজিত ‘বিজয় দিবস: নতুন প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এই প্রত্যাশা করেন।
স্বাগত বক্তব্যে কাদের গণি চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের জাতির জীবনে বিজয় দিবস এক অতিশয় গৌরবময় দিন। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা প্রিয় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমাদের ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে যুগ যুগ ধরে এই দিনটি আমরা পালন করে আসছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ যেকোনো সময়ের তুলনায় ভিন্ন রকম সময়ের সাক্ষী। ছাত্র অভ্যুত্থানে জবরদখল পাথরের মতো বসে থাকা ফ্যাসিস্টদের উৎখাত শুধু দেশে নয়, সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দেশের তরুণ সমাজের বিচক্ষণতা ও নেতৃত্বে লাখো জনতা রাজপথে নেমে এসে নির্ভয়ে লড়াই করে রক্ত দিয়েছে। মাত্র এক মাসে দীর্ঘ ১৫ বছর জাতির ঘাড়ে চেপে বসা স্বৈরাচারকে ছাত্র-জনতা তাড়িয়েছে। তাই এবারের বিজয় দিবস নতুন সংকল্প ও নতুন প্রত্যয় নিয়ে উদযাপিত হবে।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট বা ৩৬ জুলাই দ্বিতীয় বিজয় অর্জনের পর আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছি। আমরা কি আবার ভোটাধিকারহীন থাকবো নাকি আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে পারবো সেই বিষয়টি সুরাহার সময় এসে গেছে। একাত্তরে আমরা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেই স্বাধীনতার স্বাদ সত্যিকার অর্থে কি জনগণ পেয়েছে? যদি পেয়ে থাকে তাহলে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর কেন ২০২৪ সালে এসে আমাদের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার, বেঁচে থাকার নিশ্চয়তার জন্য জীবন দিতে হবে? এতগুলো ছাত্রকে কেন গুলিবিদ্ধ হতে হবে? জাতীয় পতাকা পেলেও আমরা জনগণ দেশের মালিকানা ফেরত পাইনি। বেদনার অঙ্কুরিত কণ্ঠে এখনো লিখতে হচ্ছে। এজন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ চাই। আজকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, রক্তপাতের মধ্য দিয়ে আমরা চাই, আর কোনো ফ্যাসিস্ট যেন এদেশে ফিরে না আসে।
দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, একুশে পদকপ্রাপ্ত বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও রামরুর চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক লুৎফর রহমান হিমেল, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইয়াসিন পাভেল, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক থোয়াই চিং মং সাক, লেখক ও পোর্টেট ফটোগ্রাফার নাসিল আলী মামুন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সহ-মুখপাত্র তাহসিন রিয়াজ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
এসসি/আরএ