ঢাকা: রাজধানীতে মাদকের হোম ডেলিভারি চক্রের অন্যতম মূল হোতা আইসের ‘গডফাদার’ চন্দন রায়কে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ডিএনসির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার দুপুরে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার চন্দ্রচরণ বুশ স্ট্রিট রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে চন্দন রায়কে গ্রেপ্তার করে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয়ের ডেমরা সার্কেলের একটি টিম। এ সময় তার কাছে থাকা ২০ গ্রাম আইস জব্দ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গত ১ ডিসেম্বর ডিএনসির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. খাইরুল আলমের নেতৃত্বে ডেমরা সার্কেলের একটি টিম শেরেবাংলা নগর থানাধীন শ্যামলীস্থ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের গেটের সামনে থেকে ৭ গ্রাম মেথামফিটামিনযুক্ত ক্রিস্টাল মেথ বা আইসসহ রিফাত রহমান রোদেলা (২৭) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
তার দেওয়া তথ্য যাচাই ও বিশ্লেষণ করে ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে চন্দন রায়ের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে ওয়ারী এলাকার চন্দ্রচরণ বুশ স্ট্রিট রোডের ভাড়া বাসা থেকে ২০ গ্রাম আইসসহ চন্দন রায়কে গ্রেপ্তার করে একই টিম।
কে এই চন্দন রায়
আইসের ‘গডফাদার’' নামে পরিচিত চন্দন রায় ডিগ্রি পাস করে বিমানবন্দরের লাগেজ পার্টির সদস্য হয়ে বিদেশ থেকে স্বর্ণ ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়েন। করোনাকালীন কয়েকজন মালয়েশিয়া প্রবাসী এবং বন্ধুবান্ধব মিলে আইস (ক্রিস্টাল মেথ) মাদক পাচার চক্র গড়ে তোলেন। বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে কৌশলে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে সিলিকা জেলের আড়ালে আইস (ক্রিস্টাল মেথ) বাংলাদেশে নিয়ে আসতো চক্রটি। আর দেশের অভিজাত শ্রেণির ক্রেতার কাছে ‘পার্সেল হোম সার্ভিস’ সিস্টেমে সরবরাহ করতেন চক্রের সদস্যরা।
এর আগে মালয়েশিয়া থেকে স্বর্ণের ব্যবসার আড়ালে আইস পাচারকালে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগের হাতে ৬০০ গ্রাম আইস ও পাঁচজন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হন চন্দন রায়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে বের হয়ে আবারও এই কাজে সক্রিয় হন এই মাদক কারবারি। পরে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয় ৫০০ গ্রাম আইসসহ ২০২২ সালের ২ নভেম্বর পুনরায় গ্রেপ্তার করে চন্দনকে। মাস ছয়েক জেল খেটে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে চন্দন রায় আত্মগোপনে চলে যান এবং রাজধানীর আইসের (ক্রিস্টাল মেথ) চক্রটি সক্রিয় করেন।
প্রাথমিক তথ্যমতে, ঢাকায় চন্দন রায়ের চক্রের অন্তত শতাধিক ক্রেতা রয়েছে, যারা নিয়মিত আইস সেবনের সঙ্গে জড়িত। ওয়ারী এলাকায় থাকলেও মূলত গুলশান-বনানী এলাকার বিত্তশালী পরিবারের সদস্যের কাছে বিভিন্ন সময় চন্দন রায় আইস পৌঁছে দিতেন। প্রতি গ্রাম আইস ৫-১০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
এসসি/এমজেএফ