ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ সম্পদ অর্জন: দুদকের মামলার জালে সাবেক এমপি হেনরী দম্পতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
অবৈধ সম্পদ অর্জন: দুদকের মামলার জালে সাবেক এমপি হেনরী দম্পতি জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবু

সিরাজগঞ্জ: জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা তালুকদার হেনরীর বিরুদ্ধে দুটি ও তার স্বামী সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুর নামে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুদক সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এর আগে রোববার (২২ ডিসেম্বর) সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ অপর মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।  

দুদক পাবনা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শহিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম শেখ বাদী হয়ে পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবুকে।  

মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের করবর্ষে শামীম তালুকদার লাবু’র আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ড পর্যালোচনা করে স্থাবর ও অস্থাবর বৈধ সম্পদের হিসাবের চেয়ে ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা বেশি সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যার কোনো বৈধ ও গ্রহণযোগ্য উৎস তিনি দেখাননি। এছাড়াও লাবু’র নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১২টি এবং তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম ট্রান্সপোর্টের নামে ২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

এ সব কর্মকাণ্ডে লাবু’র স্ত্রী সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী তাকে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা মোতাবেক এই দুইজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

উপ-পরিচালক শহিদুল আলম আরও জানান, সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বাদী হয়ে জান্নাত আরা তালুকদার হেনরীর নামে অপর মামলাটি দায়ের করেন।  

ওই মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের করবর্ষে জান্নাত আরা হেনরীর আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ড পর্যালোচনা করে স্থাবর ও অস্থাবর বৈধ সম্পদের হিসাবের চেয়ে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকা বেশি সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যার কোনো বৈধ উৎস ও গ্রহণযোগ্য তথ্য প্রদর্শন করতে পারেননি তিনি।  

এছাড়াও নিজের ৩৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম এন্টারপ্রাইজের ৯টি এবং তার ৩টি কোম্পানির অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২০০২ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৭ টাকা এবং ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ কারণে হেনরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০১ এর ২৭ (১) ও ১৯৪৭ এর ৫ (২) এবং মানি লন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা মোতাবেক মামলা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সাবেক এমপি জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তার স্বামী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবু সরকার পতনের পর গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে জেলা কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতাকর্মীকে হত্যা এবং একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ নভেম্বর জান্নাত আরা হেনরী, শামীম তালুকদার লাবু ও তাদের মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।