ঢাকা, শনিবার, ২০ পৌষ ১৪৩১, ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

দোসরদের কবল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জমি রক্ষার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৫
দোসরদের কবল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জমি রক্ষার দাবি সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির নেতারা।

ঢাকা: স্বৈরশাসকের থাবা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার প্রমাণ দিলেন অমুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম। গণহত্যা মামলায় কারাগারে থেকেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন মোর্শেদুল আলম ও তার সহযোগীরা।

এ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কবল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ১৬ একর জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি।

বুধবার (০১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। এদিন পতিত স্বৈরশাসক হাসিনা ও তার মন্ত্রী, এমপি, আমলার সহযোগী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কুখ্যাত মোর্শেদুল আলম ও তার সহযোগীদের নির্যাতনে দুইজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বরাবরে স্মারকলিপি পেশ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।  

সংবাদ সম্মেলন শেষে মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতারা।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক নঈম জাহাঙ্গির। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন, আব্দুর সাত্তার ও নজরুল ইসলাম।  

নঈম জাহাঙ্গির বলেন, সুপ্রিমকোর্টের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে মোর্শেদুল আলম প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় ভীতি দেখিয়ে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া ৩০০ জনের তালিকা যাচাই-বাছাই করে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

লিখিত বক্তব্য তিনি আরও বলেন,  ১৯৯৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নেয়। সমিতির কথিত মহাসচিব মোর্শেদুল আলম জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে একটি দরখাস্ত করেন মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের জন্য।

সেই দরখাস্তের আলোকে জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সমিতির কাছে জানতে চেয়ে একটি পত্র দেয়। তাতে বলা হয়, আপনার সমিতির মধ্যে কতজন মুক্তিযোদ্ধা ও কী পরিমাণ জমির প্রয়োজন? একটি হলফনামাসহ ৫০ টাকার স্ট্যাম্পে জমা দিতে আদেশ দেয়। এরপর ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা হলফনামাসহ জাতীয় গৃহায়ন কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।

৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে তালিকা জমা হওয়ার পর জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১৬ দশমিক ৩১ একর জমি বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বরাদ্দপত্র সমিতির নামে না দিয়ে সমিতির মহাসচিব মোর্শেদুল আলম নামে বরাদ্দ হয়। এতে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু সমিতির মহাসচিব আমাদের বিভিন্ন হুমকি, ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওই বরাদ্দপত্র নিয়ে সমিতির মধ্যে গোলযোগ দেখা দিলে পুনরায় বরাদ্দপত্র সমিতির নামে সংশোধন হয়।

কিন্তু স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ শাসনামলে স্বৈরাচারের মন্ত্রী শেখ সেলিম, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আ ক ম মোজাম্মেল হক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও নুর মোহাম্মদ, সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, মাহবুবুল আলম খান, হেদায়েতুল ইসলাম, আবু আলম শহিদ খান এবং অমুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম গং সম্মিলিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির ১৫ডি/১/২ প্রাতিষ্ঠানিক প্লটে (যা বর্তমান বিজয় রাকিন সিটি নামে পরিচিত) কাফরুল মিরপুরের অধীনে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে ১৬ একর জমির ওপরে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করেছে। সেসব ভবনের ফ্ল্যাট অমুক্তিযোদ্ধাদের কাছে বিক্রি করে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির সদস্য আব্দুর সাত্তার, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৫
টিএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।