যশোর: শৈত্যপ্রবাহের কারণে যশোরে গরম কাপড়ের কদর বেড়েছে। ভিড় বেড়েছে কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেটে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে মার্কেটটিতে ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনে একাধিক ক্রেতা গরম কাপড় পছন্দ ও দরদাম করছিলেন। কেনার পর ফিরছেন গন্তব্যে।
‘গরিবের’ মার্কেট হিসেবে পরিচিত হলেও যশোর কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেট এখন ধনী-গরিব সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয়। এটি ‘নিক্সন’ মার্কেট হিসেবে বেশি পরিচিত।
পুরাতন গরম কাপড়ের পাশাপাশি নতুন কাপড়ও বিক্রি হয় এখানে।
তুলনামূলক কম মূল্যে পণ্য কেনা যায় বলে কালেক্ট্ররেট মার্কেটের কদর সাধারণের কাছে বেশি।
তবে শীতের কারণে চাহিদা বাড়ায় দোকানিরা এবার বেশি দামে গরম কাপড় বিক্রি করছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। বিদেশি পুরাতন জ্যাকেট, সোয়েটারের দামও অনেক বেশি বলছেন তারা।
শহরের বেজপাড়ার আসমা বেগম বলেন, সেই নিক্সন মার্কেট এখন আর নেই। এটা এখন বড়লোকের মার্কেট হয়ে গেছে। যাতে হাত দেই তারই দাম বেশি। তবে এখানে যেরকম গরম কাপড় পাওয়া যায় তা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
দোকানি মাহমুদ এজাজ হক বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই মার্কেটে গরম কাপড়ের কদরও বাড়ে। তিনি জানান, শীতের শুরুতে দেশি জ্যাকেটের যে দাম ছিল তার চেয়ে এক থেকে দুশ’ টাকা বেড়েছে।
পুরাতন বিদেশি গরম কাপড় কিনছিলেন সদর উপজেলার কাজীপুরের আহমদ সরদার। তিনি পেশায় কৃষক। বলেন, যে শীত পড়েছে তাতে ভোরে বাইরে বের হওয়া যায় না। তার ওপর কুয়াশা। মাথা ঢাকা রাখতে না পারলে কাজ করা মুশকিল। সে কারণে মাথায় টুপি দেওয়া একটা সোয়েটার কিনতে চাই।
বাড়ির শিশুদের জন্যে ফুলহাটা সোয়েটার, ট্রাউজার, মোজা আর টুপি কেনার জন্যে সকাল থেকে কালেক্টরেট মার্কেটে ঘুরছিলেন গৃহবধূ আম্বিয়া বেগম। তিনি বলেন, বড়রা না হয় যেকোনোভাবে নিজেদের ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে পারেন। ছোটদের সেই সক্ষমতা নেই। তাই তাদের জন্য হাত-পা ঢাকা থাকবে এমন গরম কাপড় খুঁজছি।
কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেটের একপাশে রয়েছে জজকোর্ট মার্কেট আর সামনে জেলা পরিষদ মার্কেট। তবে এই দুটি মার্কেটের থেকে কালেক্টরেট মার্কেটের প্রতিই মানুষের আগ্রহ বেশি। কারণ এখানে দেশি পোশাকের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আসা পুরাতন গরম কাপড় পাওয়া যায় পর্যাপ্ত।
দোকানি শাহাদৎ হোসেন জানান, এবার এক একটি বিদেশি জ্যাকেট বিক্রি করছেন এক হাজার থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত।
শাহাদৎ বলেন, বিদেশ থেকে আসা গাইটগুলোতে এবার পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রায় নতুন জ্যাকেট পাওয়া গেছে। সেসব জ্যাকেট বাইরে নতুন কিনতে গেলে অনেক দাম। সে কারণে কালেক্টরেট মার্কেটের প্রতি ক্রেতাদের এত টান।
এদিকে মার্কেটের ভেতরের থেকে বাইরে রাস্তার ওপরের দোকানে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এসব দোকানে শিশু থেকে বয়স্ক সবারই গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। দামও তুলনামূলক অনেক কম।
যশোর এয়ারফোর্সের আবহওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রাও বাড়তে থাকে। তবে কুয়াশা এবং বাতাস থাকায় শীত তুলনামূলক বেশি অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন একই পরিস্থিতি বিরাজ করবে। দিনের থেকে রাতের তাপমাত্রা অনেক কম হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৫
আরএ