বরিশাল: প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকায় বরিশাল নগরে দিন দিন অবৈধ থ্রি-হুইলারের সংখ্যা বাড়ছে। আর এ কারণেই এখন বরিশাল তীব্র যানজটের নগরে পরিণত হচ্ছে।
আগে যেখানে জনগুরুত্বপূর্ণ দুই-একটি রাস্তায় যানজট থাকত, সেখানে এখন বরিশাল শহরজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র যানজটের দেখা মেলে প্রতিনিয়ত।
এদিকে, ছয় বছর পর ব্যাটারিচালিত হলুদ অটোরিকশার লাইসেন্সের নবায়ন কার্যক্রম গত ১২ ডিসেম্বর থেকে সিটি করপোরেশন শুরু করেছে। এতে হলুদ অটোরিকশার চালক ও মালিকরা খুশি হলেও ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক ও মালিকরা খুশি হতে পারেননি।
কারণ, দেখতে একই রকম প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স সিটি করপোরেশন থেকে দেওয়া হলেও ব্যাটারিচালিত অন্যান্য রিকশার বিষয়ে নেই কোনো নীতিমালা। ফলে লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন নম্বরবিহীন অন্য যানবাহনের মতো ব্যাটারিচালিত সাধারণ রিকশাগুলোও অবৈধ।
এ পর্যন্ত সিটি করপোরেশন দুই হাজার ৬১০টি হলুদ অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়েছে। তবে নগরে এর চেয়ে পাঁচ থেকে সাতগুণ বেশি হলুদ অটোরিকশা চলাচল করে। আর প্যাডেলচালিত রিকশার যে লাইসেন্স রয়েছে, তার চেয়ে কয়েকগুণ কম রিকশা এখন বরিশালের সড়কগুলোতে চলে। তবে সেই প্যাডেল রিকশার টোকেন লাগিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা নগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, গত এক যুগে নগরে সড়কের পরিমাণ তেমন না বাড়লেও বিভিন্ন ধরনের থ্রি-হুইলারের সংখ্যা বেড়েছে। গত তিন পরিষদ থ্রি-হুইলারগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
ছয় বছর পর সম্প্রতি শুধুমাত্র ব্যাটারিচালিত হলুদ অটোরিকশার লাইসেন্স নবায়নের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ অটোরিকশার লাইসেন্স নবায়নের আওতায় এনে বরিশাল সিটি করপোরেশন চার কোটি ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
ব্যাটারিচালিত হলুদ অটোরিকশার লাইসেন্সের নবায়ন কার্যক্রমও গত ১২ ডিসেম্বর থেকে সিটি করপোরেশন শুরু করে। তবে ২৬ ডিসেম্বর সাধারণ নবায়ন প্রক্রিয়ার সময়সীমা শেষ হয়। আর এখন জানুয়ারি মাসজুড়ে জরিমানা দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করার সুযোগ রয়েছে। তবে জানুয়ারি মাস শেষে সেই সুযোগেরও সমাপ্তি ঘটবে।
দুই হাজার ৬১০টি হলুদ অটোরিকশার মধ্যে হাজারের মতো অটোরিকশার লাইসেন্স এ পর্যন্ত নবায়ন করা হয়েছে। নবায়নের পরিমাণও আশানুরূপ নয়। আর লাইসেন্স পাওয়া পাঁচ হাজার প্যাডেল রিকশার মধ্যে এক থেকে দেড়শ টিকে আছে। বাকি রিকশাগুলোর টোকেন ব্যাটারিচালিত রিকশায় লেগেছে।
সিটি করপোরেশনের যানবাহন শাখার পরিদর্শক আতিকুর রহমান মানিক জানান, বর্তমানে সিটি মেয়রের দায়িত্বে থাকা প্রশাসক বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার লাইসেন্স নবায়ন করার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ছয় বছরের মধ্যে দুই বছরের বকেয়া ফি মওকুফ করা হয়েছে।
তিনি জানান, চার বছরের জন্য ২৪ হাজার টাকা দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করেছে হাজারের বেশি হলুদ অটোরিকশা। বাকিগুলো এখন জরিমানা দিয়ে করতে পারবে। আর যারা নবায়ন করবে না, তাদের বিষয়ে জানুয়ারি মাস শেষে সিদ্ধান্ত আসবে।
তিনি বলেন, হলুদ অটোরিকশার বাইরে ব্যাটারিচালিত সাধারণ রিকশার কোনো লাইসেন্স সিটি করপোরেশন এ পর্যন্ত দেয়নি। তবে পাঁচ হাজার প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স সিটি করপোরেশন দিয়েছে। মেয়র আহসান হাবিব কামাল পরিষদের পর সেগুলোর লাইসেন্সও আর কোনো পরিষদ নবায়নের উদ্যোগ নেয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৫
এমএস/আরএইচ