ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অযৌক্তিক ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৫
অযৌক্তিক ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির

ঢাকা: অযৌক্তিক হারে ভ্যাট বৃদ্ধি ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নির্ধারণের এই সিদ্ধান্ত অন্যায় ও অযৌক্তিক, এই বর্ধিত ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।

বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভ্যাট ও এস. ডি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং রেস্তোরাঁ সেক্টরের সংকট প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি দীর্ঘদিন যাবৎ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমাদের দীর্ঘদিনের আলোচনা ও প্রচেষ্টার পর ধাপে ধাপে ভ্যাটের হার ১৫% থেকে ৫% করা হয়েছিল যার ফলে ভ্যাট আহরণও বহুগুনে বৃদ্ধি পায়। বিগত অর্থ বছরে ভ্যাটের হার কমানোর ফলে ভ্যাট আদায় ১৯% বেড়েছে যা এনবিআর চেয়ারম্যান মহাদয় বলেছেন। আমরা ভ্যাট ৩৭% নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছিলাম, যাতে করে মানুষের ভ্যাট দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় ও সরকারের ভ্যাট আদায় আরও বাড়ে। আমরা মনে করি ৭০% রেস্তোরাঁ এখনো ভ্যাটের আওতার বাহিরে।

ইমরান হাসান বলেন, জনজীবনের কথা চিন্তা না করে যদি শুধু আইএমএফের শর্ত পূরণের জন্য ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য হবে দুর্ভাগ্যজনক। বর্তমানে সরকারি হিসেবে দেশে গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশের মতো কিন্তু বাস্তবে তা ৩০ শতাংশের উপরে।  বর্তমান বাজারে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ভোক্তার ক্রয় সীমার বাহিরে চলে যাচ্ছে। তার উপরে অধিকাংশ রেস্তোরাঁর ভোক্তাই মধ্যবিত্ত, কর্মজীবী, শ্রমজীবী তাই ভ্যাট বৃদ্ধিতে ভোক্তার উপর উঠবে বাড়তি দামের বোঝা অপরদিকে রেস্তোরাঁ হবে ক্রেতা শূন্য।

তিনি আরো বলেন, এই সেক্টরে কর্মরত ৩০ লক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরিতে সরকারি কার্যকর উদ্যোগের প্রয়োজন। বর্তমানে ১২টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার তদারকিতে পরিবর্তে যেকোন ১ টি মন্ত্রণালয়/ অধিদপ্তর/ সংস্থার মাধ্যমে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চাই। এতে করে সরকার ও সমিতির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সকল রেস্তোরাঁ, স্ট্রিট ফুড ও সকল খাদ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে সংগঠনের মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার করের আওতা না বাড়িয়ে কিংবা কর ফাঁকি রোধ করার ব্যবস্থা না করে যারা সকল ধরনের নিয়ম-কানুন মেনে ভ্যাট ট্যাক্স প্রদান করে ব্যবসা পরিচালনা করে তাদের উপর অন্যায় ভাবে বাড়তি ভ্যাট ট্যাক্সের বোঝা চাপাতে এনবিআর বেশি আগ্রহী। বর্তমানে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেস্তোরাঁ ব্যবসার উপর ৫% থেকে বর্ধিত ভ্যাট ১৫% করা হচ্ছে এবং সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নামে পূর্বে আরও একটি ১০% করের বোঝা সাধারণ মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদি বর্ধিত ভ্যাট ১৫% ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১০% করা হয় তবে সাধারণ ভোক্তাকে মোট ২৫% কর প্রদান করতে হবে। এ অবস্থায় ভোক্তার নিকট হতে কোনভাবেই এই ২৫% বাড়তি কর আদায় করা সম্ভব হবেনা।

তিনি আরো বলেন, বর্ধিত হারে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার্থে, জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে আগামীতে মানববন্ধন করবে। প্রতিকি হিসেবে ১ দিনের জন্য সারা দেশের রেস্তোরাঁ সমূহ বন্ধের কর্মসূচি গ্রহন করা হবে, তাতেও যদি সরকার তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তাহলে সারাদেশে অনিদিষ্ট কালের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৪
এসএমএকে/এমএক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।