রাজশাহী: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেছেন, এদেশে বসবাসরত পাহাড়ি ও সমতল জাতিগোষ্ঠীর সমান অধিকার রয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন আপনাদের পাশে রয়েছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে দুই দিনব্যাপী রাজোয়াড় জাতিগোষ্ঠীর আলপনাচিত্র প্রদর্শন এবং ১৩ জাতিগোষ্ঠীর নৃত্য-গীত ও নাট্যানুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ীর চৈতন্যপুরে শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সেল আয়োজিত তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে এর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, আপনারা সব সময় মনে রাখবেন, এই বরেন্দ্রভূমি ও পুণ্ড্রভূমিতে রাজোয়াড়, ওরাওঁ, সাঁওতাল, বাঙালি নির্বিশেষে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যারা আছেন আপনাদের সবার সংস্কৃতি ধরে রেখে একসাথে বসবাস করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। সংস্কৃতি কেবল আমরা কীভাবে হাঁটি, খাই, বসবাস করি, চলন-ফিরন, আত্মীয়তা, বিবাহ বন্ধন শুধু তাই নয়, সংস্কৃতি হলো আমার নাচ, গান এবং ছবি আঁকাও। এর ভেতর থেকে আমি জীবনকে কেমন করে দেখি, জীবন কেন গুরুত্বপূর্ণ সেটা পরিষ্কার হয়।
তিনি ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ভাষা মানুষকে তার জীবনের উপলব্ধি প্রকাশ করতে সাহায্য করে। একটা ভাষা হারিয়ে যাওয়া মানে এক রকম উপলব্ধি হারিয়ে যাওয়া। আপনাদের রাজোয়াড় ভাষা ধরে রাখতে কর্মশালার আয়োজন করবো এবং আপনাদের নিয়ে কাজ করব। প্রয়োজনে বেশি করে কাজ করব যাতে এই ভাষার চর্চাটা আবারও শুরু হয়। ভাষা যাতে অন্যের দ্বারা আত্তীকৃত না হয়ে যায় সেদিকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, হাতের পাঁচটি আঙুল সমান না, ভিন্নতাই আত্মপরিচয়ের সৃষ্টি করে। আপনি ভিন্ন বলেই বাঙালি আলাদা। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই এই ১৩ জাতিগোষ্ঠী একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ব্যক্ত করবেন, বাঙালি যারা আছেন তারাও শ্রদ্ধা করতে শিখবেন। কারণ শ্রদ্ধা না করলে অন্য কোথাও গিয়ে আপনি অশ্রদ্ধার পাত্র হয়ে যাবেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, অনগ্রসর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজকুমার শাও।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উপ-পরিচালক এস এম শামীম আকতার, গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চৈতন্যপুর এলাকাবাসী, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে চৈতন্যপুর গ্রামের বিভিন্ন আলপনা চিত্র পরিদর্শন করেন অতিথিরা।
উদ্বোধনী আলোচনার শুরুতে অতিথিদের পা ধুইয়ে ও উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা ১৩ জাতিগোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
এসএস/আরআইএস