ঢাকা: বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি বছর আনুমানিক ৩০ হাজার নতুন শিশু জন্ম গ্রহণ করে থাকে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানান, বর্তমানে ১.৩ মিলিয়ন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় (আরআরআরসি)- এর তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থানরত নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০,০৫,৫২০ জন যার মধ্যে ২,০৪,২৭৪ পরিবার রয়েছে। দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৫২ শতাংশ শিশু, ৪৪ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক, ৪ শতাংশ বয়স্ক রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৪৯২,৭০৫ জন পুরুষ (৪৯ শতাংশ), ৫১২,৮১৫ জন নারী (৫১ শতাংশ) রয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি বছর আনুমানিক ৩০ হাজার নতুন শিশু জন্ম গ্রহণ করে।
তিনি জানান, বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। ১৯৭৭-৭৮ সালে ২০০,০০০ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে যার মধ্যে ১৯০,০০০ জন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যায়। ১৯৯১ সালে ২৫০,৮৭৭ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে যার মধ্যে ২৩৬,৫৯৯ জন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যায়। পরবর্তীতে ২০১২-২০১৬ সালে প্রায় ৮৭,০০০ জন এবং ২০১৭ সালে ৮৫০,০০০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। তাছাড়া ২০২৪ সালে নতুন করে আনুমানিক ৬৪,৭১৮ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে, যাদের বায়োমেট্রিক পরিচিতি বর্তমানে সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর ভিত্তিতে পরবর্তীতে একটি সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র জানান, ইউএনএইসিআর এর মিয়ানমার কার্যালয় ‘মিয়ানমার ইমার্জেন্সি ওভারভিউ ম্যাপ’ নামে একটি মানচিত্র প্রকাশ করে, যেখানে ফেব্রুয়ারি ২০২১- এর পর মিয়ানমার থেকে ভারতে প্রবেশকারী বাস্তুচ্যুত ৭১,৩০০ জন রোহিঙ্গা জনগণের কথা বলা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশকারী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সম্পর্কে কোন তথ্য সেখানে ছিল না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার ও জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালকরা বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি এবং ইউএনএইসিআর এর বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রতিনিধির সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করেন।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশকারী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত তাদের কাছে না থাকায় সে বিষয়ে কোনো তথ্য মানচিত্রে দেওয়া হয়নি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাক্রমে
ইউএনএইসিআর। সম্প্রতি মানচিত্রটি হালনাগাদ করেছে। ফেব্রুয়ারি ২০২১- এর পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকারী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৫
টিআর/আরআইএস