ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সংসদে ৪২ সংরক্ষিত আসন ও আলাদা নির্বাচন চায় হিন্দু মহাজোট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
সংসদে ৪২ সংরক্ষিত আসন ও আলাদা নির্বাচন চায় হিন্দু মহাজোট শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ডিআরইউতে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকারসহ সব ক্ষেত্রে আসন সংরক্ষণ ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। দাবি আদায় না হলে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব দাবি জানান মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়।

লিখিত বক্তব্যে মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল বলেন, দেশে প্রতিনিধিত্বহীনতায় হিন্দু জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। মাইনোরিটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধানে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উজ্জ্বল করতে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত করতে জাতীয় সংসদসহ সর্বক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

নির্বাহী সভাপতি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কখনোই এদেশের জনসংখ্যা অনুপাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে মনোনয়ন দেয়নি। সরকারি হিসাব মতে ১২ শতাংশ সংখ্যালঘু হলেও সংখ্যালঘুদের ৪২টি আসন পাওয়ার কথা। কিন্তু যৌথ নির্বাচনের কারণে স্বাধীনতার ৫৫ বছরে কোনো সংসদেই হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি পাঠাতে পারেনি। বিএনপি থেকে মাত্র ১ জন, জাতীয় পার্টি থেকে ২-৩ জন, আওয়ামী লীগ থেকে ৬-১৫ জন এমপি হতে পেরেছেন। অর্থাৎ আগামীর পার্লামেন্ট হিন্দু শূন্য বা নামে মাত্র ২/১ জন থাকার সমূহ সম্ভবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট হিন্দু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ সংগঠন একমাত্র হিসেবে কমিশনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদ স্থানীয় সরকারসহ সব ক্ষেত্রে পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থার যৌক্তিক কারণসহ প্রস্তাব পেশ করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় দুটি কমিশনই হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি ও প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করেছে। কমিশন দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের যে প্রস্তাব দিয়েছে সেখানে উচ্চকক্ষ বা নিম্নকক্ষ কোনো জায়গাতেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কোনো ব্যবস্থা রাখেনি। আমরা খুব উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি - ১৯৪৭ সাল থেকেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্লাকমেইল করেছে এবং এখনো করছে।  

মহাজোটের সভাপতি আরও বলেন, এখনো সময় আছে। সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি এখনো আমলে নিতে পারেন। হিন্দু সর্বশেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। বর্তমান সরকার যদি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রাণের দাবি জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকারসহ সব ক্ষেত্রে আসন সংরক্ষণ ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা মেনে না নেয় তাহলে হিন্দু সম্প্রদায় কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এবং ভোট কেন্দ্রে যাবে না। অন্যকে ক্ষমতায় বসানোর হাতিয়ার হওয়ার জন্য এবং শুধু মারধর খাওয়া আর বাড়িঘর ছেড়ে পালানোর জন্য হিন্দু সম্প্রদায় আগামী কোনো নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান সমন্বয়কারী বিজয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্য  সহ-সভাপতি দুলাল কুমার মন্ডল, তরুণ কুমার ঘোষ, নিতাই দে প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
এসসি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।