সাতক্ষীরা: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া শেখ হাসিনাকে যেন কোনোভাবেই ভুলতেই পারছে না সাতক্ষীরার শ্যামনগরের খাদ্য বিভাগ।
এখনো ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ স্লোগান সম্বলিত চাউলের বস্তা বিতরণ করছে দপ্তরটি।
সরকার পতনের ৭ মাস অতিবাহিত হলেও সরকারি চালের বস্তায় এমন স্লোগান থাকায় সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতাকেই দুষছেন স্থানীয়রা।
রোববার (১০ মার্চ) শ্যামনগর পৌরসভার শ্যামনগর মহাসিন কলেজ মার্কেটে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় স্বল্পমূল্যে চাল বিতরণ করা হয়। এ সময় সুবিধাভোগীদেরকে দেওয়া ৩০ কেজি ওজনের একেকটি চালের বস্তায় হাসিনা সরকারের স্লোগানটি দেখা যায়। বিতরণকৃত প্রতিটি বস্তায় দৃশ্যমান ছিলো স্লোগানটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য এলাকার ডিলারদের বিতরণ করা চালের বস্তাগুলোতেও ছিল স্লোগানটি।
ডিলারদের দাবি, খাদ্য বিভাগ থেকে তারা যেভাবে চাল পেয়েছেন, সেভাবেই বিতরণ করেছেন।
এদিকে, এখনো পুরনো স্লোগানযুক্ত বস্তা পরিবর্তন না করায় সুবিধাভোগীসহ স্থানীয় জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
শ্যামনগর পৌরসভার বাদঘাটা গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ বিগত সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন যদি সরকারি চালের বস্তায় সেই শাসকের নাম দেখা যায়, তবে বুঝতে হবে, পুরোনো শাসনের প্রেতাত্মারা এখনো লুকিয়ে আছে। বিষয়টি কষ্টের।
উপকারভোগী নুর ইসলাম গাজী জানান, ৫ আগস্টের পর বস্তায় শেখ হাসিনার নাম মুছে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এখন আবার সেই নাম লেখা বস্তা আসছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শ্যামনগরের ছাত্র প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ জানান, ৫ আগস্ট একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করেছে। কাজেই অভ্যুত্থান পরবর্তীতে কোন সরকারি কর্মসূচিতে শেখ হাসিনার স্লোগান সরিয়ে নেয়া উচিত ছিল। এতদিনেও খাদ্য বিভাগের বস্তায় এমন স্লোগান থাকা দুঃখজনক। যদি কর্তৃপক্ষ জেনে বুঝেই আগের বস্তা ব্যবহার করে তাহলে ধরে নেব তাদের মধ্যে এখনো হাসিনা প্রীতি রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ জাহিদুর রহমান বলেন, এই বস্তাগুলো আগের টেন্ডারে নেওয়া এজন্য এমন হচ্ছে। আমরা সকল এলএসডিকে একাধিকবার নির্দেশনা দিয়েছি সকল বস্তা থেকে স্লোগান মুছে দেয়ার জন্য। কিন্তু দ্রুত সময় চাউল বিতরণ করার কারণে এগুলো মুছা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১২১ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৫
এমআরএম