ঢাকা: নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রায় একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগর বিষয়টি জানান।
যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ— পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ভ্রমণকালে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখুন।
চালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ দেবেন না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।
রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করুন। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুটওভার ব্রিজ নেই, সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হোন। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন।
বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাবেন না। অপরিচিত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে খাবার,পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
বাসমালিকদের প্রতি অনুরোধ— অদক্ষ অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে দেবেন না। চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালান এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করেন, সেজন্য চালককে নির্দেশ দিন। ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করা যাবে না।
বাসচালকদের প্রতি অনুরোধ— ওভার স্পিডে গাড়ি চালাবেন না, ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং করবেন না। ক্লান্তি, অবসাদ বা অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় সাথে রাখুন। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তুলবেন না।
আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
লঞ্চ, স্টিমার ও স্পিডবোটের যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ— জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে উঠবেন না। নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ করবেন না। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
যাত্রাপথে ঝড় দেখা দিলে এদিক ওদিক ছোটাছুটি না করে নিজের জায়গায় অবস্থান করুন। স্পিডবোটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন।
লঞ্চ, স্টিমার ও স্পিডবোটের মালিকদের প্রতি অনুরোধ— নির্ধারিত সংখ্যক ও নির্ধারিত গ্রেডের মাস্টার ও ড্রাইভার দিয়ে নৌযান পরিচালনা করুন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌযানের চলাচল বন্ধ রাখুন। নৌযানের মাস্টার ব্রিজে যাত্রী সাধারণের অবাধ চলাচল বন্ধ করার জন্য দুই পাশ অস্থায়ীভাবে বন্ধের ব্যবস্থা করুন। লঞ্চে পর্যাপ্ত বয়া রাখুন।
লঞ্চ, স্টিমার ও স্পিডবোটের চালকদের প্রতি অনুরোধ— আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান নিয়ে বন্দর ত্যাগ করুন। ডেকের ওপর যাত্রীদের বসার স্থানে মালামাল পরিবহন থেকে বিরত থাকুন। পর্যাপ্ত সংখ্যক বয়া,লাইফ জ্যাকেট নৌযানে রাখুন।
যাত্রাপথে ঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন বা তীরে ভিড়িয়ে রাখুন। নৌযানে মোবাইল ফোন ও রেডিও রাখুন এবং নিয়মিত আবহাওয়ার বুলেটিন শুনুন। প্রয়োজনে আবহাওয়া সংক্রান্ত অ্যাপ ব্যবহার করুন। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া নৌযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকুন।
সব ফায়ার পাম্প ও অগ্নিনিরোধক যন্ত্রপাতির সঠিকতা নিশ্চিত করুন। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযান শনাক্তকরণের লক্ষ্যে নৌযানে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট দীর্ঘ দড়ি সংবলিত বয়া ও লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখুন।
ট্রেনের যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ— ট্রেনের ছাদে, বাফারে, পাদানিতে ও ইঞ্জিনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন। ট্রেনে ভ্রমণের সময় পাথর নিক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। ট্রেনে ভ্রমণকালে মালামাল নিজ দায়িত্বে রাখুন। বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
প্রয়োজনে পুলিশ সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর ০১৩২০০০১৩০০ ও ০১৩২০০০১২৯৯; হাইওয়ে পুলিশের সদরদপ্তরের নম্বর ০১৩২০১৮২৫৯৮, রেলওয়ে পুলিশের সদরদপ্তরের নম্বর ০১৩২০১৭৭৫৯৮, নৌ পুলিশ সদরদপ্তরের নম্বর ০১৩২০১৬৯৫৯৮, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ০১৭৭৭৭২০০২৯ নম্বর এবং জেলা পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২০২, ২০২৫
এজেডএস/আরএইচ