দাবি আদায়ে শিশুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদের গাড়ি আটকে দিলেন চাকরিচ্যুত এক সেনাসদস্য।
রোববার (১৮ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা শেষে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় ছোট্ট শিশুকে কোলে নিয়ে গাড়ির সামনে বসে পড়েন তিনি।
এ দিন সকালে তিন দফা দাবি আদায়ে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরুর সময়ে চাকরিচ্যুত নৌবাহিনীর নাবিক এম বাহাউদ্দিন বলেন, ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছি। আমাদের দাবির বিষয়ে আলাপ করতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে যদি কেউ না আসে তবে ৪৫ মিনিটের মধ্যে আমরা জাহাঙ্গীর গেটের উদ্দেশে লংমার্চ শুরু করব। এ ছাড়া আমাদের প্রধান সমন্বয়ক নাইমুল ইসলামকে মুক্ত করে আনব।
পরে সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল দুপুর ২টায় প্রেসক্লাবে এসে আলোচনা বসে। সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদল ও চাকরিচ্যুত সেনাসদস্যের কয়েকজনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শেষে বিকেল ৪টায় প্রতিনিধিদলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান আন্দোলনকারীদের বলেন, আমরা আপনাদের দাবি মেনে নিলাম। তবে তা আস্তে আস্তে বাস্তবায়ন করা হবে।
কিন্তু চাকুরিচ্যুত সেনাসদস্যরা তা মেনে না নিয়ে তখনই সব বক্তব্য লিখিত দিতে বলেন। তারা প্রেসক্লাবের ভেতরে স্লোগান দেন এবং বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদলের কয়েকটি গাড়ির নিচে শুয়ে পড়েন।
গাড়িগুলো যাতে প্রেসক্লাবের ভেতর থেকে বের হতে না পারে, তাই প্রেসক্লাবের গেটগুলোতেও তালা লাগিয়ে দেন চাকরিচ্যুত সেনাসদস্যরা। এরপর সেখানে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর একটি গাড়ির সামনে এক বাবা তার কোলের শিশুকে নিয়ে বসে পড়েন। সেনা কর্মকর্তা বারবার অনুরোধ করলেও তারা বলেন, আমাদের দাবি না মানলে আমরা এক চুলও নড়ব না।
চাকরিচ্যুত সেনাসদ্যদের তিন দাবি হলো—
যদি কোনো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের চাকরি পুর্নবহাল করা সম্ভব না হয় তাহলে ওই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সরকারি সব সুযোগ সুবিধাসহ সম্পূর্ন পেনশনের আওতাভুক্ত করতে হবে; যে আইন কাঠামো ও একতরফা বিচার ব্যবস্থার প্রয়োগে সশস্ত্র বাহিনীর শত শত সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেই বিচার ব্যবস্থা ও সংবিধানের আর্টিকেল ৪৫ সংস্কার করতে হবে; এবং গ্রেপ্তার হওয়া মুখ্য সমন্বয়ক সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত সৈনিক নাইমুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে চাকরিচ্যুত সৈনিক মো. রিপন হোসেন বলেন, তিন বাহিনী মিলিয়ে ৬০০ জনের মতো চাকরিচ্যুত হয়েছেন। বাধ্যতামূলক পেনশনে পাঠানো হয়েছে অনেককে। কোর্ট মার্শাল করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতি আমরা মানি না।
আরও পড়ুন: দাবি মানার আশ্বাসেও সরছেন না চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যরা, গাড়ির সামনে শুয়ে পথরোধ
ডিএইচবি/এমজেএফ