ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩২, ২৬ জুন ২০২৫, ০০ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

মাদকমুক্ত সমাজ ছাড়া উন্নত রাষ্ট্র সম্ভব নয় 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩৩, জুন ২৬, ২০২৫
মাদকমুক্ত সমাজ ছাড়া উন্নত রাষ্ট্র সম্ভব নয়  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ঢাকা: মাদকাসক্তদের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি একনেক সভায় সাতটি বিভাগীয় শহরে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। ”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। ভবিষ্যতে উন্নত এবং সফল রাষ্ট্রের কাতারে পৌঁছাতে হলে তরুণ সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে হবে। মাদকের ‘ভয়াবহ আগ্রাসনের’ কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানাভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ দিক হলো নারী, শিশু এবং কিশোরদের এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগসের আবির্ভাবের ফলে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারের সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। এসব নতুন মাদকের বিষয়ে আমাদের নতুন কৌশল নিতে হচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নতুন ধরনের মাদকের বিষয়ে সজাগ রয়েছে এবং এসবের বিস্তার রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মাদকের করালগ্রাস থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে বর্তমান সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে বর্তমানে নিয়োজিত আছেন ২ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে এনফোর্সমেন্টে রয়েছেন ১ হাজার ৬২২ জন। ৬৪টি জেলা কার্যালয়, ১টি বিশেষ জোন, ৮টি বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয় এবং ৮টি বিভাগীয় কার্যালয়ের সহায়তায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, অপরাধ দমনে কাজ করে এমন অন্যান্য সংস্থার জনবলের সঙ্গে তুলনা করলে এ সংখ্যা ‘সীমিত’ এবং সংস্থাটির যানবাহন স্বল্পতাসহ অভিযানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উন্নত উপকরণের অভাব রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, কোস্টগার্ডের পাশাপাশি নোডাল এজেন্সি হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের সদিচ্ছায় ইতোমধ্যে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪’ প্রণীত হয়েছে এবং অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রথম ব্যাচের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারকে বহুমাত্রিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

এজেডএস/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।