ঢাকা: রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, ফলে সকাল থেকে তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট।
বিশেষ করে মিরপুর এলাকার কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১০, ১৩, ১৪ ও কালশি সড়কে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ।
মিরপুর ১৪ নম্বর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আমার অফিস এয়ারপোর্টে। দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। জানি না অফিসে পৌঁছাতে পারব কিনা।
মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার তানিয়া সুলতানা জানান, বৃষ্টির কারণে মিরপুর ১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া এলাকায় পানি জমেছে। এ অবস্থায় যানজট এড়াতে মিরপুর ১২ থেকে ফার্মগেটগামী গাড়িগুলোকে মিরপুর ১ দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক পুলিশ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। যেসব গাড়ি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাস্তায় বন্ধ হয়ে আছে, সেগুলো রেকার দিয়ে সরানো হচ্ছে। শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়ায় কিছুটা ভোগান্তি হলেও পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
ইলিশ পরিবহনের চালক মোহাম্মদ জানান, মিরপুর ১৪ থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত আসতেই তার এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। ১৩ নম্বরে জলাবদ্ধতার কারণে গাড়ি প্রায় চলছেই না। জানি না সাভার যেতে আরও কত সময় লাগবে।
এদিকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, কারওয়ান বাজার, গ্রিন রোড, মনিপুরীপাড়া, নিউমার্কেট, আসাদগেট ও জিগাতলাসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরসমান পানি দেখা গেছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আরিফিন জানান, সকালে অফিসগামী পথে কারওয়ান বাজার যাওয়ার সময় গ্রিন রোড এলাকায় তাকে হাঁটুপানি পেরিয়ে যেতে হয়েছে। পশ্চিম তেজতুরী বাজারে রিকশার পাদানি পর্যন্ত পানি উঠেছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে ফকিরাপুল, কাকরাইল, মালিবাগ, রাজারবাগ ও মতিঝিলের সড়কে কোমরসমান পানি পার হয়ে কর্মস্থলে পৌঁছেছেন চাকরিজীবী হেলাল।
জিগাতলা, গ্রিন রোড ও নিউমার্কেট এলাকায় জলাবদ্ধতার মুখে পড়েন রাকিব। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী ভিজে গেছে। ছোট ছোট শিশুদের কোলে নিয়ে মাকে-বাবাকে কষ্ট করে এগোতে দেখেছি।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শেষ রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আভাস রয়েছে আরও বজ্রসহ বৃষ্টির। এতে তাপমাত্রা কমবে।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। আকাশ থাকবে মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন। দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলো মিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
বৃষ্টিপাতের ফলে কর্মমুখী মানুষ পড়েছেন বিড়ম্বনায়। বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে যানজটও। ফলে বেড়েছে ভোগান্তি।
এক পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সন্ধ্যা নাগাদ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জিএমএম/আরআইএস