ঢাকা, সোমবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩২, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে বেড়েছে ট্রান্সশিপমেন্ট

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:৪৩, অক্টোবর ৬, ২০২৫
বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে বেড়েছে ট্রান্সশিপমেন্ট

ঢাকা: মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ড. মোহাম্মদ মুইজ্জুর কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন দেশটিতে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম।

রোববার (৫ অক্টোবর) প্রেসিডেন্ট প্যালেসের রিপাবলিক স্কোয়ারে পৌঁছালে জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি চৌকস দল হাইকমিশনারকে গার্ড অব অনার দেয়।

চিফ এবং ডেপুটি চিফ অব প্রটোকল তাকে স্বাগত জানান। গার্ড অব অনার দেওয়ার পর এক মনোজ্ঞ বেরু ধুম্মারি শোভাযাত্রা (সাংস্কৃতিক শোভাযাত্রা) অনুষ্ঠিত হয়। আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষে হাইকমিশনার রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ে পৌঁছান এবং দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন।

এরপর রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের গাজী হলে রাষ্ট্রপতি ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম তার পরিচয়পত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেন। পরিচয়পত্র গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতি প্রায় ১০-১৫ মিনিটের এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচনায় দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ককে আরও জোরদার করার এবং সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা:

আলোচনাকালে রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু মানবসম্পদ উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মতো পারস্পরিক স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  

তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং তিনি আশা করেন আগামীতে দু'দেশের বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে।

হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমশক্তি নিয়োগ দেওয়ায় মালদ্বীপ সরকারকে ধন্যবাদ জানান, যারা উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশ্বাস দেওয়া হয়। উল্লেখ করা হয় যে, সম্প্রতি মালদ্বীপের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট বেড়েছে।

এছাড়াও, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমর্থন, আর মালদ্বীপের কৃষি খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ সহায়তা করা এবং প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতার পথ খুঁজে বের করার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য রাষ্ট্রপতি মুইজ্জুকে আমন্ত্রণ জানান।

উল্লেখ্য, মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশ ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

প্রসঙ্গত, নবনিযুক্ত হাইকমিশনার ড. নাজমুল একজন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ এবং সংসদীয় কূটনীতিক। মালদ্বীপে যোগদানের পূর্বে তিনি ওয়াইসি, তুর্কি পার্লামেন্ট (টিবিএমএম), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটে (এফএসআই) কূটনীতিক প্রশিক্ষক এবং আঙ্কারা ইলদিরিম বায়েজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ইনস্টিটিউটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ‘পশ্চিমা বিশ্বের বাইরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্ব ও সফট পাওয়ার কৌশল’ নিয়ে ব্যাপক কাজ করেন। তার এই বহুমুখী অভিজ্ঞতা মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও কৌশলগতভাবে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।