ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

যাত্রীদের ওয়েটিং সিটে ঘুমায় টোকাই-শ্রমিক!

তাবারুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
যাত্রীদের ওয়েটিং সিটে ঘুমায় টোকাই-শ্রমিক! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালের মূল ভবনের নিচতলায় যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য রয়েছে সারি সারি আসন। স্টিল ও লোহার তৈরি চকচকা এসব আসনের উপরে ঘুরছে বৈদ্যুতিক পাখাও!
 
বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া বাস যাত্রীদের অপেক্ষা করার জন্য এ ব্যবস্থা।

কিন্তু যাদের জন্য এতোসব আয়োজন তারাই স্থান পাচ্ছেন না সেখানে বসার।

অভিযোগ আছে, রাত-দিন এসব আসন দখল করে রাখেন ভবঘুরে, নেশাখোর, টোকাই ও স্থানীয় শ্রমিকরা।
 
তাদের একেকজন পুরো একটি আসন দখল করে, এর উপর লম্বা হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আর যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন।
 
শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এমনকি দোতলায় বারান্দায়ও কয়েকজনকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
 
যাত্রীদের অপেক্ষার আসনে ঘুমিয়ে থাকা এসব ব্যক্তিদের মধ্যে স্থানীয় বিভিন্ন দোকানপাটের কর্মচারী ও বাসের সহকারীরাও রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এদের অধিকাংশ ভবঘুরে ও টোকাই শ্রেণির বলে কাউন্টারের স্টাফরা দাবি করেছেন।
 
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে যাত্রীদের বসার সুবিধার জন্য তৈরি এসব আসন দখল করে এভাবে বাইরের লোকজন ঘুমিয়ে থাকলেও তাদের কেউ বাধা দিচ্ছেন না।

যাত্রী আসন দখল করে ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তিদের ছবি বাংলানিউজের ক্যামেরায় তোলার দৃশ্য চোখে পড়ে টার্মিনালে থাকা বাস কাউন্টারের স্টাফদের। এ দৃশ্য দেখে টার্মিনাল ভবনের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত এস আই এন্টারপ্রাইজের স্টাফ মো. ফারুক ঘুমিয়ে পড়া ব্যক্তিকে ডাকাডাকি করে তুলে দিচ্ছিলেন।
 
জানতে চাইলে মো. ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, যাত্রীদের আসনে যারা ঘুমিয়ে থাকে, আসলে তারা এখানকার কেউ না। তারা বাইরের শ্রমিক, ভবঘুরে ও টোকাই।
 
যাত্রীদের আসনে শুয়ে থাকা ব্যক্তিরা বাসের স্টাফ-এমন অভিযোগের বিষয়ে বলেন, স্টাফ যারা আছে, তারা তো বাসেই থাকে। তাদের বাস পাহারা দিতে হয়, বাস রেখে তারা তো এখানে আসবে না।
 
টার্মিনাল ভবনের দোতলায় রয়েছে কয়েকটি হার্ডওয়ারের দোকান। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক দোতলার জুয়েল মটরসের এক বিক্রয়কর্মী জানান, যাত্রীদের আসনে ঘুমিয়ে থাকাদের অধিকাংশ বিভিন্ন বাসের সহকারী। গরমের মধ্যে তারা এখানে ফ্যানের নিচে ঘুমিয়ে থাকে।
 
এ সময় দোতলায় বারান্দায় শুয়ে থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আশপাশের দোকানেরই কর্মচারী। তাদের আলাদা কোনো বাসা নেই। দিনে কাজ শেষে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তারা এখানেই ঘুমিয়ে থাকেন।
 
তবে কয়েকজন যাত্রীর অভিযোগ, ভবঘুরে, টোকাই, দোকানের কর্মচারী, শ্রমিক- যারা এখানে এভাবে ঘুমিয়ে থাকেন, তাদের কেউ বাধা দেয় না। এতে করে যাত্রীদের বসার জায়গা থাকছে না, আবার অনেকক্ষেত্রে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।
 
সকালে এই টার্মিনাল ভবনে দুই নারী কর্মীকে ঝাঁড়ু দিতে দেখা গেলেও টার্মিনালের নিরাপত্তায় কোনো কর্মীকে দেখা যায়নি। এছাড়া ভবঘুরে ও টোকাইরা যাত্রীদের বসার আসনে ঘুমিয়ে থাকলেও কাউকে তাদের বাধা দিতেও দেখা যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
টিএইচ/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।