চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের টোকনা গ্রামে পরকীয়া প্রেমের জের ধরে প্রেমিকার বাড়িতে গণপিটুনিতে গাজলুর রহমান (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা দিকে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে তিনি গণপিটুনির শিকার হন।
তবে একটি সূত্র দাবি করছে নিহত গাজলুর প্রেমিকার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশে ওই বাড়িতে এসেছিল।
নিহত গাজলু উপজেলার শ্যামপুর সাহাপাড়া গ্রামের বক্কারের ছেলে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার তারাপুর গ্রামের বক্কারের ছেলে গাজলুর সঙ্গে টোকনা গ্রামের আবদুল বাশিরের স্ত্রী নাঈমা বেগমের দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া সর্ম্পক চলছিল। বুধবার রাত দেড়টার দিকে গাজলু আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রেমিকার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পরিবারের লোকজন চিৎকার করলে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে গাজলুকে গণপিটুনি দেয়।
খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাজলুর কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও আট রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। পরে আহত অবস্থায় গাজলুকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে।
বাসিরের চাচাতো ভাই আব্দুর রকিবের দাবি, টোকনা গ্রামের আবুল কাসেম আকালুর ছেলে আবুল বাসিরের স্ত্রী এক সন্তানের জননী নাইমা বেগমের সঙ্গে একই ইউনিয়নের শ্যামপুর সাহাপাড়া গ্রামের আবু বাক্কারের ছেলে গাজলুর রহমানের বেশ কিছু দিন ধরে পরকীয়া চলছিল। এর জের ধরে বুধবার রাত পৌনে দুইটার দিকে গাজলুসহ পাঁচজনের একটি দল বাসিরের বাড়িতে এসে বাড়ির অন্যান্য ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে বাসিরের ঘরের দরজা খুলতে বলে।
বাসির দরজা খোলা মাত্রই গাজুল বাসিরের বুকে পিস্তল ধরে হত্যার চেষ্টা করলে বাসির চিৎকার দেয়। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে গাজলুকে ধরে গণপিটুনি দেয়। এ সময় গাজলুর সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে শিবগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা গাজলুকে আটক করে।
মনাকষা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মনাকষা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আব্দুস সোবহান জানান, গণপিটুনির শিকার গাজলুকে পুলিশের মাধ্যমে প্রথমে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নাঈমার স্বামী আবদুল বাশির জানান, নাঈমা এক সন্তানের জননী হলেও দীর্ঘদিন ধরে গাজলুর সঙ্গে তার পরকিয়া সর্ম্পক ছিল। এর আগেও একবার নাঈমা গাজলুর হাত ধরে উধাও হয়ে যায়। পরে শিবগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলে পুলিশ নাঈমাকে উদ্ধার করে এবং গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে তাকে তার ঘরে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ওসি এমএম ময়নুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
আরএ