ঢাকা, শনিবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘উপজেলা পরিষদেরই দৈন্যদশা, এখান থেকে উন্নয়ন হয় কীভাবে?’

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
‘উপজেলা পরিষদেরই দৈন্যদশা, এখান থেকে উন্নয়ন হয় কীভাবে?’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: চুনকাম উঠে গেছে দেয়ালের। ছাদ থেকে যেন খসে পড়ছে পলেস্তারা।

সব ভেন্টিলেটারে জাল বুনেছে মাকড়সা। বারান্দার অপরিচ্ছন্ন-নোংরা পরিবেশ। ঠিক এর পাশেই ময়লার ভাগাড়। দৈন্যদশার এ চিত্র ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষের।

নিজের নির্বাচনী এলাকার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষের এমন মলিন চেহারা দেখে চরম অসন্তুষ্ট হন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্থানীয় উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বরাদ্দকৃত ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণ বাবদ অর্থের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের এ সংসদ সদস্য।
Mymensingh_01
তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদে এসে হতাশ হলাম। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এখান থেকে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু পরিষদের সভাকক্ষেরই দৈন্যদশা। দেখে মনে হয় এখান থেকে উন্নয়ন হয় কীভাবে। কেউ এ ভবনের যত্ন নেয় না।

এখানে ফুলের গাছ নেই। সত্যিই আমি ভীষণ হতাশ হয়েছি। আমি আরেকবার এসে উপজেলা পরিষদের এমন মলিন চেহারা দেখতে চাই না। ’

এ সময় উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষের ও আশেপাশের ঝকঝকে পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে পাশের জঙ্গল (ময়লার ভাগাড়) পরিস্কার করে ফুলের বাগান করারও পরামর্শ দেন বিরোধী দলীয় নেতা।

স্মৃতিচারণ করে রওশন এরশাদ বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমি ময়মনসিংহ সদরের এমপি ছিলাম। এতদিন যদি আমি থাকতাম এ উপজেলা পরিষদের চেহারা এমন থাকতো না। এখানে ঝকঝকে তকতকে পরিবেশ থাকতো।

ময়মনসিংহ শহর ও ঢাকার সড়কের বেহাল দশারও কঠোর সমালোচনা করেন বিরোধী দলীয় নেতা। বলেন, ঢাকার রাস্তা দেখে মনে হয় চাষ করা ক্ষেত। এখন একদিকে রাস্তা রিপেয়ার করলে দু’দিন পরেই নষ্ট হয়ে যায়। জাতিগতভাবে আমরা অনেক নিচে নেমে গেছি।
Mymensingh_02
জাতীয় পার্টির সরকারের শাসনামলে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরে বলেন, চাইনিজরা এ ব্রিজ নির্মাণ করে দিয়েছিলো। এ ব্রিজ এখনো অক্ষত রয়েছে। শম্ভুগঞ্জে আরেকটি ব্রিজ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতেও প্রচেষ্টা চলছে, বলেন রওশন।

খাবারে ভেজালের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ ঝরে বিরোধী দলীয় নেতার কন্ঠে, ‘মানুষকে প্রতিনিয়ত খাবারে বিষ খাওয়ানো হচ্ছে। কোন খাবারই বিশুদ্ধ নেই। পানিও ময়লা। ওষুধ ও বাতাসেও ভেজাল। ভেজালের বিরুদ্ধে দোকানে দোকানে গিয়ে প্রতিবাদ করুন, সোচ্চার হোন।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ ওয়ালিদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন মুক্তি, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ আহমেদ খান, সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শেখ মো. হুমায়ুন কবির, ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান আফাজ উদ্দিন সরকার, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহমেদ।
Mymensingh_03
স্থানীয় সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন মুক্তি বলেন, ‘রওশন এরশাদ স্বপ্ন দেখতেন ময়মনসিংহ বিভাগ হবে। প্রধানমন্ত্রী কথা রেখেছেন। ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। রওশন এরশাদ প্রমাণ করেছেন তিনি ময়মনসিংহের অভিভাবক, ময়মনসিংহের মা।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ ওয়ালিদ ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়ন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ এবং ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পরে বিরোধী দলীয় নেত্রী সদর উপজেলার ১১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ১১৬ বান্ডেল ঢেউটিন ও চেক বিতরণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।