ঢাকা, শনিবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর ছবি অবমাননা

খুলনায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
খুলনায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)বিল্লাল হোসেন খানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়ে ঝাড়ু মিছিল করেছেন উপজেলার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা বাজার এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

ঝাড়ু মিছিলটি উপজেলা শহর প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এসে ইউএনও’র কুশপুতুল দাহ করার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

ইউএনও বিল্লাল হোসেনের নির্দেশে গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতার ছবি সম্বলিত প্যান্যা ফেস্টুন ভাংচুর করে ডাস্টবিনে ফেলার অভিযোগে ইউএনও’র বিরুদ্ধে এ কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী।

বটিয়াঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অরিন্দম গোলদার বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর)  দুপুরে খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে (ঘ অঞ্চল) ইউএনও’র বিরুদ্ধে এ অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

বটিয়াঘাটা বাজার চত্ত্বরে আমিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম খান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ হালদার।

উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন খান উদ্দেশ্যমূলকভাবে এলাকার মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছেন।

তিনি অযথা সাংবাদিক, নিরীহ মানুষকে হয়রানি করতে তার অফিসে ডেকে এনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে জেল জরিমানা করছেন। তার ভয়ে উপজেলার নিরীহ মানুষ উপজেলা ছাড়া। দু’টি প্রেসক্লাব আজ তালাবদ্ধ। অবাধ সাংবাদিকতা আজ হুমকির মুখে।

তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জামায়াত-বিএনপির কিছু দাগি লোককে নিয়ে ইউএনও আজ জনগণের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।

তিনি বলেন, প্রশাসনকে সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার পাঠিয়েছে। আজ সেই জনগণ তার ভয়ে এলাকাছাড়া। সে কারণে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপজেলাবাসী ইউএনও বিল্লাল  হোসেন খানের অপসারণ চাইছেন।

আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিল্লালকে বটিয়াঘাটা থেকে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পরে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে উপজেলাকে অচল করে দেওয়া হবে। এবং উপজেলাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বিল্লালের অপসারণ করা হবে। তখন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকেই সকল দায়-দায়িত্ব বহন করার হুশিয়ারিও দেন উপজেলা চেয়ারম্যান।

‘ছাত্রদলের ক্যাডার রাজাকার’ ইউএনও বিল্লাল হোসেন খানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারসহ সকল সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদীপ বিশ্বাস, ওবায়দুল হক, জাকির হোসেন লিটু, মোক্তার হোসেন, মিজানুর রহমান বাবু, মিলন গোলদার, মশিবর রহমান, বিবেক বিশ্বাস, এস এম ফরিদ রানা, চয়ন বিশ্বাস, বিপুল মণ্ডল, কিংকর রায়, কার্ত্তিক ঠিকাদার, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক অরিন্দম গোলদার, ফেরদৌস হোসেন, বিকাশ হালদার, শশাঙ্ক রায়, রমেশ রায়, সেলিম শেখ, ইব্রাহিম শেখ, রফিকুল ইসলাম, সুরজিৎ মণ্ডল, রিনা লায়লা, রেহানা আফরোজ শোভা, মিনারা বেগম, মিরাজুল তরফদার, হুমাউন কবির, মনিরুজ্জামান, অসীম মণ্ডল, তরিকুল ইসলাম, ইন্দ্রজিত টিকাদার, আমিনুল ইসলাম, মাসুদ রানা, মরাজুল তরফদার, কামরুল ইসলাম, আশিক, অনিমেষ, নিউটন, এনামুল হক, অহিদ, সাহিন, রবিউল, আক্তার, মাহতাব, নিন্তানন্দ, এনামুল আলী, সোলায়মান শেখ প্রমুখ।  

এর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননা, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ, কারণ ছাড়াই অর্থ জরিমানার প্রতিবাদে ও তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মানববন্ধন করেন খুলনার সাংবাদিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।