মাগুরা: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৬৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেছে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে ডাঙ্গাপাড়া বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। আগুনে পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়।
আগুনে দোকানে থাকা পেট্রোলের ড্রাম বিস্ফোরণে কমপক্ষে ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ইমান আলী (৪০), শফিকুল (৩০) ও সোহাগ (২০) নামে তিনজনকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষে আহত অন্যদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। তাদের মাগুরা সদর হাসপাতাল, মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পার্শ্ববর্তী নড়াইলের লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে উপজেলার বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রহমান ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জামালের স্কুলে হাতাহাতি হয়। তাদের বাড়ি উপজেলার মণ্ডলগাতি ও রোনগর গ্রামে। এ দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় দুই গ্রামের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়।

বুধবার দুপুরে নহাটা পুলিশ ফাঁড়ির দুই উপ-পরিদর্শকের (এসআই) উপস্থিতিতে বনগ্রাম স্কুল মাঠে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সলিশ বৈঠক বসে। এতে মণ্ডলগাতি গ্রামের পক্ষে অলিয়ার রহমান, আব্দুর রহমান ও রোনগর গ্রামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন জাফর মিয়া ও আসাদ মিয়া। সালিশ চলাকালে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে চার নেতার সমর্থক মণ্ডলগাতি ও রোনগর গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একপক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালায়। তারা ডাঙ্গাপাড়া বাজারের কমপক্ষে পাঁচটি দোকানে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। খবর পেয়ে মাগুরা থেকে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট দেড় ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, এর আগেই বাশার মোল্লা, আব্দুর রহমান, গণি মোল্লা, ডা. আমিনুর রহমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) সুদর্শন কুমার রায় জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে থেকে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৬৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ব্যবহৃত হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এমজেড