ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ইফার প্রকল্পের নথি দুদককে দেয়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
ইফার প্রকল্পের নথি দুদককে দেয়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়

ঢাকা: নির্দিষ্ট সময়ের ৬ দিন পার হলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) বিভিন্ন প্রকল্পের নথিপত্র পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
 
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মো. আফজালসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ৩১ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে নথিপত্র তলব করে চিঠি দেয় দুদক।

চিঠিতে ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাহিদা অনুসারে নথিপত্র দুদককে সরবরাহ করতে বলা হয়েছিল।
 
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নোটিশে নির্ধারিত সময়ের ৬ দিন পার হলেও চাহিদা মোতাবেক কোনো নথি দুদককে সরবরাহ করেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়।
 
দুদকে আসা অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বর্তমান ডিজি সামীম মো. আফজালসহ কয়েকজন কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানটির মসজিদভিত্তিক প্রকল্পে ৩৮ কর্মকর্তাকে মৌখিক নির্দেশে সরকারি চাকরি দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া ফিল্ড অফিসার পদে অতিরিক্ত নিয়োগ, প্রশিক্ষণের অর্থ আত্মসাৎ, ভুয়া বিল করে অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ডিজিসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
 
এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক ধর্ম মন্ত্রণালয়কে যেসব নথিপত্র পাঠাতে বলেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের প্রজেক্ট কনসেপ্ট পেপার, অনুমোদিত ডিপিপি, আইএমইডি’র প্রজেক্ট মূল্যায়ন প্রতিবেদন, প্রকল্পে নিয়োজিত ১২ জন ফিল্ড অফিসার, ২৩ জন ফিল্ড সুপারভাইজার ও তিনজন মাস্টার ট্রেইনার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি ও নোটশিট। ওই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদির বিলের কপি, প্রশিক্ষণ ও ভ্রমণভাতা খাতে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত বরাদ্দকৃত বাজেট ও বিল ভাউচার, বর্ধিত খাতগুলোর খরচের হিসাব বিবরণীর সত্যায়িত ছায়ালিপিও সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
 
বর্ধিত প্রকল্পের কেন্দ্রগুলোর পূর্ণ ঠিকানা ও প্রকল্প পরিচালকসহ ওই সব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম-ঠিকানা, মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের সভার নোটিশ, রেজুলেশন ও অনুমোদন সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি সরবরাহ করতে বলে দুদক।
 
এছাড়া ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের সত্যায়িত ছায়ালিপিও সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
 
ইফার ডিজি সামীম মো. আফজালের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, তার মৌখিক নির্দেশে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পে সরকারি কোনো নিয়োগপত্র ছাড়াই দায়িত্ব পালন করে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন ১২ ফিল্ড অফিসার, ২৩ ফিল্ড সুপারভাইজার ও তিন মাস্টার ট্রেইনার। ২০১১ সালের জুন থেকে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের পেছনে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।
 
অভিযোগে আরও বলা হয়, গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ভাতা হিসেবে প্রকল্পে রাখা সোয়া কোটি টাকা শিক্ষকদের না দিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে। দাওয়াতি মাহফিল নামক অনুষ্ঠানের নামে এ টাকা খরচ দেখানো হচ্ছে।
 
শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৯২ সাল থেকে সারাদেশে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রকল্পটির এখন পঞ্চম ধাপ শেষ হয়েছে। ৬৪৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পে সারাদেশের ৪৩ হাজার মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন কর্মরত আছেন। প্রায় ১২ লাখ শিশু লেখাপড়া করছে এ প্রকল্পের অধীন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এডিএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।