কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে: ইমরান সাহেদ; বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে রাজধানীতেই থাকেন।
২২ সেপ্টেম্বরের অগ্রিম টিকিটের জন্য বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লাইনে দাঁড়ান ইমরান। কিন্তু কে জানতো, ২৭ ঘণ্টা তাকে অপেক্ষা করতে হবে টিকিট নামে ‘সোনার হরিণ’র জন্য। শেষ পর্যন্ত মিললো ২৩ সেপ্টেম্বরের টিকিট।
ইমরানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের দিন লাইনে থাকা টিকিট প্রত্যাশীদের পেছনে তিনিও দাঁড়িয়ে যান। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় লাইনে দাঁড়িয়ে শুক্রবার সকাল ৯টায় হাতে পান টিকিট।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৯টায় থেকে ২৩ সেপ্টেম্বরের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। আগের দিন লাইনে দাঁড়ানোয় শুক্রবার টিকিট প্রত্যাশীদের মধ্যে এক নম্বরে ছিলেন তিনি।
![](files/September2015/September18/Kamlapur_Tiket_423087902.jpg)
শুরুতেই কাউন্টারে জয়পুরহাটের আন্তঃনগর ‘নীলসাগর এক্সেপ্রেস’র কেবিনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাথ টিকিট চাইলেন তিনি। কিন্তু কাউন্টার থেকে তাকে জানানো হয়, ভিআইপিদের জন্য কেবিন বুকিং দেওয়া আছে। তাই বাধ্য হয়ে শীতাতপ চেয়ার টিকিট নিতে হলো ইমরানকে।
বাংলানিউজের কাছে তিনি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, টানা ২৭ ঘণ্টা ধরে টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষায় ছিলাম। সিরিয়ালেও এক নম্বরে ছিলাম। কিন্তু আশানুরুপ টিকিট পাইনি।
ইমরান বলেন, কাউন্টার থেকে একবার বলে ২৩ সেপ্টেম্বর কেবিনের ব্যবস্থা থাকবে না। আবার বলছে ভিআইপিদের জন্য টিকিট বুকিং দেওয়া হয়ে গেছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, রেলের টিকিটের জন্য আমাদের মতো সাধারণ নাগরিকরা সব সময় বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের দরকার। স্বচ্ছতা না থাকলে তো একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সব নাগরিকদের জন্য সমান অধিকার তো থাকলো না।
![](files/September2015/September18/Kamlapur_ML3_145530109.jpg)
রাজধানীর একটি সোয়েটার কারখানায় কর্মরত পোশাককর্মী আরিফ ও ইব্রাহিম বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে শুক্রবারের টিকিটের জন্য কাউন্টারে অবস্থান নেন।
তারা জানান, লাইনের ৬ ও ৭ নম্বর সিরিয়ালে ছিলাম। মোহনগঞ্জে যাওয়ার জন্য হাওর এক্সপ্রেসের টিকিট পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু কাউন্টারে অনেক দেরি করে টিকিট দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এতে টিকিট প্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
টিকিটের জন্য অপেক্ষমান লাইনের সামনের কয়েকজনের মধ্যে থাকা ডাক বিভাগের কর্মী আবু জামালও টিকিট পেয়েছেন সকাল সাড়ে ৯টায়।
টিকিট নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় হাসিমুখে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সিলেটের জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের চারটি টিকিট পেয়েছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এবার ঈদ করতে যাচ্ছেন আবু জামাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
টিএইচ/জেডএস
** ভোগান্তি উপেক্ষা করে টিকিটের জন্য হাজারো মানুষ