ঢাকা: কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ১৭ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মীকে মাঠে নামানো হচ্ছে। নিয়মিত কর্মীদের সঙ্গে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে আরো সাড়ে ৮ হাজার অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নকর্মীর মাধ্যমে নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে মূল লক্ষ্য।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় একযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন পৃথকভাবে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন করবেন।
ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি সূত্র জানায়, দুই সিটিতে সাড়ে ৮ হাজার নিয়মিত পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে ডিএসসিসিতে ৫ হাজার ২০০ ও ডিএনসিসিতে ৩ হাজার ৩০০ কর্মী নিয়মিতভাবে নগরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে থাকেন।
সূত্র জানান, এবার কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দুই সিটিতে অতিরিক্ত আরো সাড়ে ৮ হাজার অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নকর্মী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসসিসিতে প্রায় ৫ হাজার ও বাকিগুলো ডিএনসিসি’র পরিচ্ছন্নতার কাজ করবেন।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে দুই সিটি করপোরেশনে টার্গেট দুই দিনে শেষ করা। তবে তাদের চেষ্টা থাকবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব বর্র্জ্য অপসারণের মাধ্যমে নগরীর পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা।
এই সময়ের মধ্যে রাজধানীর ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাটসহ নগরজুড়ে ঈদ উপলক্ষে জবাইকৃত পশুর রক্ত, নাড়িভুঁড়ি ও অন্যান্য সব বর্জ্য অপসারণ করার কথা জানিয়েছে সিটি করপোরেশন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা বাংলানিউজকে জানান, এবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণে আমাদের টার্গেট ৪৮ ঘণ্টা। গতবার ২৪ ঘণ্টায় নগরী থেকে পশুর বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়েছিল। এজন্য এবারও আশা করি ৩০ ঘণ্টার মধ্যে পরিচ্ছন্নতার অভিযান শেষ করতে পারবো।
তিনি জানান, উত্তর সিটি করপোরেশনে নিয়মিত ৩ হাজার ৩০০ পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছেন। এর বাইরে আরো সাড়ে ৩ হাজারের বেশি অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। মোট ৭ হাজার কর্মী নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির সব বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ করবেন।
প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আরো জানান, এই পরিচ্ছন্নতা কাজে এবার ডিএনসিসি ২৫টি ডাম্পার, ৬টি পে-লোডার, ২টি টায়ার ডোজার, ৪টি পানির গাড়ি, ২টি প্রাইম মোভার, ২টি ট্রেইলর, এসকেভেটর, চেইন ডোজার, শতাধিক খোলা ট্রাক ব্যবহার করে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। এছাড়া দুই হাজার ছোট ছোট ভ্যান গাড়ি বর্জ্য অপসারণের কাজে ব্যবহার হবে।
বেলা ২টায় ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক উত্তরা ১৫ ও ১৬ নম্বর সেক্টরের মধ্যবর্তী সেতুসংলগ্ন গরুর হাট থেকে এই পরিচ্ছন্নতার অভিযান উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন বিপন কুমার সাহা।
আর ডিএসসিসি’র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তাদের নিয়মিত পরিচ্ছন্নকর্মীর সংখ্যা ৫ হাজার ২০০ জন। কোরবানি উপলক্ষে তিন দিনের জন্য দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে আরো প্রায় ৫ হাজার নিয়োগ করা হয়েছে।
মোট ১০ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী দুপুর থেকে মাঠে নেমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগে বেলা ২টায় রাজধানীর ধোলাই খাল এলাকার সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠে অবস্থিত অস্থায়ী পশুর হাট থেকে বর্জ্য অপসারণের অভিযান উদ্বোধন করবেন মেয়র সাঈদ খোকন।
ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আরো জানান, এবারও দুই ডজনের বেশি ডাম্পার, ৬টি এক্সকাভেটর, ৫টি বুলডোজার ও ২টি টায়ার ডোজার, চেইন ডোজার, ৫টি পে-লোডার, প্রাইম মোভার, ট্রেইলর, ৫টি পানির গাড়িসহ বিভিন্ন বড় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
এছাড়া দ্রুত বর্জ্য অপসারণের জন্য ১৩৫টি খোলা ট্রাক, নিয়মিত ৩২৫টি কন্টেইনারসহ আরো অতিরিক্ত ২২টি কন্টেইনার, ৭৩টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ১৭টি কম্পেক্টর ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নগরীর বিভিন্ন স্পট ও সড়ক থেকে কোরবানির পশুর রক্ত, নাড়িভুঁড়ির বর্জ্য পানি দিয়ে পরিষ্কার করার জন্য ৫টি পানির গাড়ির পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে প্রাপ্ত পানির গাড়ি নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া কোরবানির রক্ত, বর্জ্য ও অন্যান্য আবর্জনা মাধ্যমে যাতে পরিবেশকে দূষণ না হয়ে সেজন্য দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে জীবাণুনাশক ওষুধ মিশ্রিত পানি ও ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৫
টিএইচ/জেডএস