ঢাকা: ঈদের দিন বিকেল থেকে পুরোদমে চলছে রাজধানীর বর্জ্য অপসারণ কাজ। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতভর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সড়ক, অলিগলিসহ বিভিন্ন এলাকার বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
শনিবার সকাল (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নকর্মীদেরকে নগরীর বিভিন্ন অলিগলি ও বাসা-বাড়ি থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে দেখা যায়।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানান, এবার ১০ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী ডিএসসিসি এলাকার কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত রয়েছেন।
ডিএসসিসির বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট ছোট ভ্যানে করে বিভিন্ন ওয়ার্ডের অলিগলিতে ঢুকে বাসা-বাড়ির সামনে থাকা ব্যাগ ও বস্তা ভর্তি কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করছেন পরিচ্ছন্নকর্মীরা।
সেসব বর্জ্য ভ্যানে করে স্থানীয় ডাস্টবিনের কন্টেইনারে রাখা হচ্ছে। এরপর বর্জ্য ভর্তি হলে কন্টেইনার ট্রাকে করে সিটি করপোরেশনের নির্দিষ্ট ডাম্পিং গ্রাউন্ড এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। তিন দিন কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য নিয়মিত পরিচ্ছন্নকর্মীদের সঙ্গে অতিরিক্ত আরো সাড়ে চার হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োজিত রয়েছেন।
ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন জানান, নগরী থেকে যত দ্রুত সম্ভব কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কাজ চলছে। ১০ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী পুরো ডিএসসিসি এলাকাজুড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডিএসসিসির নিয়মিত পরিচ্ছন্নকর্মী পাঁচ হাজার ২০০ জনের সঙ্গে অতিরিক্ত আরো সাড়ে ৪ হাজারের বেশি রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন বলে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জানান।
শুধু ঈদের দিনেরই নয়, এরপর দু’দিন শনি ও রোববার যেসব কোরবানি দেওয়া হবে সেগুলোর বর্জ্য দিনে দিনেই অপসারণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ঈদের দিন শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় বর্জ্য অপসারণের কাজ উদ্বোধন করে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ১০ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী কোরবানির বর্জ্য অপসারণে কাজ করছেন। ঈদের দিনসহ টানা তিন দিনের সব বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
এরপরও যদি কোনো বাসা-বাড়ি ও রাস্তার পাশে বর্জ্য থেকে যায়, তাহলে সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে অভিযোগ করার সুযোগ রয়েছে। সেখানে কেউ অভিযোগ করলে পরিচ্ছন্নকর্মীরা বর্জ্য অপসারণ করতে চলে যাবেন।
ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, এবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণে দুই ডজনের বেশি ডাম্পার, ৬টি এক্সকাভেটর, ৫টি বুলডোজার ও ২টি টায়ার ডোজার, চেইন ডোজার, ৫টি পে-লোডার, প্রাইম মোভার, ট্রেইলর, ৫টি পানির গাড়িসহ বিভিন্ন বড় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
এছাড়া দ্রুত বর্জ্য অপসারণের জন্য ১৩৫টি খোলা ট্রাক, নিয়মিত ৩২৫টি কন্টেইনারসহ আরো অতিরিক্ত ২২টি কন্টেইনার, ৭৩টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ১৭টি কম্পেক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে।
নগরীর বিভিন্ন স্পট ও সড়ক থেকে কোরবানির পশুর রক্ত, নাড়িভুঁড়ির বর্জ্য পানি দিয়ে পরিষ্কার করার জন্য ৫টি পানির গাড়ির পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে প্রাপ্ত পানির গাড়ি নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া কোরবানির রক্ত, বর্জ্য ও অন্যান্য আবর্জনা থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে প্রতিটি ওয়ার্ডে জীবাণুনাশক ওষুধ মিশ্রিত পানি ও ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৫
টিএইচ/জেডএস