ঢাকা: চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবের মিনায় পদদলিতের ঘটনায় হতাহত ও নিখোঁজ হাজিদের যথাযথ ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তৎপর বাংলাদেশ। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিজন হাজির নিরাপত্তা নিশ্চিত না হবে, ততক্ষণ এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য থেকে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিনা ট্র্যাজেডিতে পদদলিতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন বাংলাদেশি হাজির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৯১ জন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের দাফন, আহতদের চিকিৎসা ও নিখোঁজদের সন্ধান করা ছাড়াও সবাইকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনাই এখন মূল কাজ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিহতদের দাফন কোথায় সম্পন্ন হবে, সে সিদ্ধান্ত হবে তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে। মৃত্যুর আগে হাজিরা তাদের পরিবারের কাছে দাফনের ব্যাপারে কখনো কোনও ইচ্ছার কথা জানিয়ে গেছেন কি না, তা জানার চেষ্টা করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যারা সৌদি আরবে মৃত্যু হলে সেখানেই দাফনের ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন, তাদের ইচ্ছার মর্যাদা দেওয়া হবে। তবে সৌদি সরকার এ ব্যাপারে কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেয় কি না, তাও দেখবে বাংলাদেশ।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও প্রতিনিধি দল এ নিয়ে কাজ করছে বলে জানায় মন্ত্রণালয় সূত্র। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বেশ ক’জন আমলা রয়েছেন এ দলে।
মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. ফয়জুর রহমান ফারুকী বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছর হজ উপলক্ষ্যে প্রথম ধাপে এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন ও পরে আরও ৫ হাজার হাজির সৌদি আরব যাওয়ার ব্যবস্থা হয়। এর মধ্যে ভিসা জটিলতাসহ বিভিন্ন কারনে কেউ কেউ যেতে পারেন নি। তবে সব মিলিয়ে এবার এক লাখ ৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি হাজি পবিত্র হজ পালন করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের অপর কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সৌদিতে নিজেদের মতো করে তৎপরতা চালানোর সুযোগ নেই। কারোর মরদেহ পেলে তারা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চাইলেই সেটি আমরা দেখতে বা নিতে পারি না। কিন্তু আমাদের দল কাজ করে চলেছে।
তিনি জানান, নিহত হাজিদের শেষ ইচ্ছানুযায়ী অথবা তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মিনা ও অন্যান্য স্থানের হাজিদের খোঁজে সবসময় হটলাইনে যোগাযোগ করছে মন্ত্রণালয়।
ফারুকী জানান, আগামী ৭ অক্টোবর ধর্মমন্ত্রী ও সচিবের দেশে ফেরার কথা। তবে পরিস্থিতি যদি দাবি করে, তাহলে প্রয়োজনে আরও সময় বাড়াবেন তারা। মোট কথা, তারা বাংলাদেশের সকল হাজির তথ্য পাওয়া পর্যন্ত কাজ করবেন।
এদিকে, রোবাবার (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট। তাদের আগমন যেন নিরাপদ ও স্বস্তির হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিনার বড় জামারাতে শয়তানের স্তম্ভে পাথর ছোড়ার সময় পদদলিতের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭৬৯ জন হাজি। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯৩৪ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৫
এসকেএস/আরএইচ
** মিনায় পদদলিতের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৬৯
** মিনায় নিখোঁজ হাবীবুর ও হাজেরা খাতুনের খোঁজ মিলেছে
** ‘বাবাকে বাঁচাতে পারিনি’
** মিনায় নিখোঁজ মায়ের সন্ধান চান সন্তানেরা
** ফেনীর নিখোঁজদের বাড়িতে শোকাবহ পরিবেশ
** মিনায় পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা ৭১৯
** মিনায় পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫৩
** সৌদিতে হাজিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
** মিনায় পদদলিত হয়ে মৃতের ঘটনায় খালেদার শোক
** মিনায় পদদলিত হয়ে দেড়শ হাজির মৃত্যু