ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অদম্য ৭ নারীর গল্প ‘সেভেন’ এবার বাংলায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৫
অদম্য ৭ নারীর গল্প ‘সেভেন’ এবার বাংলায় ছবি : জি এম মুজিবর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী নারীর প্রতি নানা প্রতিকূলতা, পদে পদে যৌন নিপীড়ন। এর মাঝেও দুর্দম কিছু নারী এগিয়ে যান, লড়াই করেন অন্যের অধিকার আদায়েও।

এমন সাত নারীর জীবনের কঠিন বাস্তবতার গল্প ‘সেভেন’ এবার বাংলাদেশে আয়োজন হল বাংলায়।

জাতিসংঘের মহিলা দপ্তর ‘ইউএন ওমেন’ বিশ্বের ৩৭টি দেশে মোট ২৬টি ভাষায় এ নাটক আয়োজন করেছে ইতোমধ্যে। সর্বশেষ বাংলাদেশে এটি বাংলায় রূপ পেল।

শনিবার (০৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্বের এ সাত সাহসী নারীর গল্প তুলে ধরেন এদেশেরই সাত মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।  

‘ডেভেলপিং এফেকটিভ মিজারস টু প্রিভেন্ট সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ইন টার্শিয়ারি এডুকেশন ইনস্টিটিউশনস’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী কর্মশালার অংশ এ আয়োজন। এদিন সকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মশালাটি শেষ হবে রোববার (০৪ অক্টোবর) বিকেলে।

আফগানিস্তানের ফরিদা আজিজি, উত্তর আয়ারল্যান্ডের আইনেজ ম্যাকরম্যাক, রাশিয়ার ম্যারিনা পিসক্লাকোভা পার্কার, গুয়েতেমালার অ্যানাবেলা ডি লিয়ন, পাকিস্তানের মুখতার মাই, কম্বোডিয়ার মু সোচুয়া, নাইজেরিয়ার হাফসাত আবিওলা- এ মানবাধিকার কর্মীরা জীবনের নানা সময়ে নিজেরা নিপীড়নের শিকার হয়েও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন ও করছেন। শনিবার সন্ধ্যায় তাদের কথাগুলো জানা গেল এ নাটকে।

তাদের কেউ কৃষ্ণাঙ্গ, কেউ ধর্মের নামে নির্যাতিত, কেউ আবার গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন জীবনের কোন পর্যায়ে। তাদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলে যায় বিশ্বের আরও হাজারো নারীর গল্প। সবাইকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে ও উদ্যমী করতে ‘ইউএন ওমেন’ এ আয়োজন করে থাকে বলে আয়োজকরা জানান।  

আফগানিস্তানের ফরিদা আজিজি নিজের গল্পে বলেন, নিজেকে আড়াল করতে কখনো কখনো বোরখা খুব কাজে লাগে।

‘আফগানিস্তানে কোন মেয়ের চিকিৎসা পুরুষ চিকিৎসক করতে পারবে না এবং নারীদেরও  চিকিৎসা শাস্ত্রে জ্ঞাণ নেওয়ার অধিকার নেই’- এক নারীর একা সন্তান প্রসবের ঘটনা ও মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরে এটি বলা হয়।

কম্বোডিয়ার মু সোচুয়া ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘সমাজে পুরুষ মানুষ সোনা, মেয়ে মানুষ সাদা শাড়ির কোণা- একটুতেই দাগ পড়ে যায়। ’

নাইজেরিয়ার হাফসাত আবিওলা বলেন, ‘আমেরিকার মানুষ অন্য কোন দেশ-মানুষ এমনকি পাশের কানাডা সম্পর্কেও ধারনা রাখে না। ছাত্রদের আন্দোলনের মাঝে আমি কথা বলেছিলাম, সেদিন প্রথম টের পেলাম- আমার ভেতরও কথা বলার শক্তি আছে। ’

তাদের গল্পে উঠে আসে- স্বামীর হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার নারীদের আর্তনাদের কথা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফেয়ারসেল।

তিনি বলেন, সারাবিশ্বে নারীদের অগ্রগতিতে যাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য তাদের গল্প নিয়ে এ আয়োজন। আমরা আশা করি, এ সাত নারীর গল্প থেকে অনেক কিছু শেখার ও জীবনে উজ্জীবিত হওয়ার ইন্ধন পাবেন নারীরা। সমাজকে বদলাতে নিজের শক্তির ব্যবহারই যথেষ্ট বলে তারা বুঝবেন।

এ কর্মশালায় অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. ইয়াসমিন হকসহ অনেকে অংশ নিয়েছেন।

গল্প শেষে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, গল্পগুলো শুনতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমাদের এখানে এর চেয়ে খারাপও হচ্ছে। গল্পগুলো আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শোনালে সবাই সচেতন হতে পারে।

তিনি নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ করে এসব নাটক থিয়েটারে রূপ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।   

বাংলাদেশ বেতারের নাহীদা নাসরিন বলেছেন হাফসাতের গল্প, শিল্পী মহলানবিশ মু সোচুয়া, ইনসিডিন বাংলাদেশ’র নাসিমুল আহসান অ্যানাবেলা, নারীপক্ষ’র রওশন আরা বেগম আইনেজ, ইউএন ওমেন’র শামমীন সুলতানা ফরিদা, ওয়াসেকা আয়েশা খান এমপি মেরিনা চরিত্র, ইউএন ওমেন’র দিলরুবা হায়দার মুখতার চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, আপডেট ২৩৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৫
এসকেএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।