কুমিল্লা: হাসপাতালের মৃত তালিকায় নাম থাকলেও মর্গে লাশ নেই কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার বাসিন্দা ইউনুছ মোল্লার (৫২)। লাশের সন্ধানে বর্তমানে সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসপাতালে ও মর্গে খোঁজ নিচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনরা।
২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইউনুছ মোল্লার বোনের ছেলে আশিকুর রহমান বাহার তার মামার সংবাদটি মুঠোফোনে দেশে তার আত্মীয়-স্বজনদের জানান। তিনি জানান, মিনার নিকটবর্তী হাসপাতালে মৃতদেহের নামের তালিকায় (ছবিসহ) ইউনুছ মোল্লা-বাংলাদেশি লেখা আছে। কিন্তু সৌদি আরবের কমপক্ষে ১০টি হাসপাতাল ও মর্গে ঘুরেও মামার লাশ খুঁজে পাইনি। আমরা সবাই মামার লাশের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করছি।
২৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের মিনায় ‘শয়তান স্তম্ভে’ পাথর ছোড়ার সময় পদদলিত হয়ে দেশটির সরকারি হিসাব মতে প্রায় ৮’শ হাজি নিহত হন। এদের মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ৪১ জন। আর এই মৃত তালিকায় ইউনুছ মোল্লার নামও রয়েছে।
মৃত ইউনুছ মোল্লা কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহালক্ষ্মীপাড়ার দক্ষিণ মোল্লা বাড়ির মৃত আব্দুল বারি মোল্লার ছেলে। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তিনি বেসামরিক বিমানে চাকরি করতেন। ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত ছিলেন তিনি।
ইউনুছ মোল্লার আত্মীয়-স্বজনরা জানান, বড় বোন ফাতেমা বেগমকে (৬৫) নিয়ে ইউনুছ মোল্লা ৩ সেপ্টেম্বর হজে যান। ২৪ সেপ্টেম্বর মিনায় ‘শয়তান স্তম্ভে’ পাথর ছোড়ার জন্য ইউনুছ মোল্লা বোনকে রেখে একা গিয়েছিলেন। এরপর আর ফিরে আসেননি।
ইউনুছ মোল্লার বাড়িতে এখন শোকাবহ পরিবেশ। হাসপাতালে নাম আছে অথচ মর্গে লাশ নেই। কান্না-অতীত স্মৃতি সবই তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাদের।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ইউনুছ মোল্লার ভাতিঝা রফিক জানান, চাচার লাশের জন্য আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিচ্ছেন। সৌদি দূতাবাসসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা খবর নিচ্ছি। যদি লাশ খুঁজে পাওয়া যায় , তাহলে আমরা সৌদি সরকারের কাছে অনুরোধ করব যেন চাচার দাফন জান্নাতুল মাওয়াতে করা হয়।
ইউনুছ মোল্লার আত্মীয় সাংবাদিক মতিউর রহমান হেলাল জানান, সৌদি আরব সরকারের উচিত মুসলিম বিশ্বের স্বার্থে মিনায় বিশৃঙ্খলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, যেন আমাদের মত কাউকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের এমন করুণ পরিণতি দেখতে না হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
আরআই