ঢাকা, শনিবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অপরিকল্পিত ঢাকা গড়ে ওঠায় দায়ী সবাই

সিনিয়র করেসন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৫
অপরিকল্পিত ঢাকা গড়ে ওঠায় দায়ী সবাই ছবি: জি এম মুজিবুর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সবার যোগসাজশেই অপরিকল্পিত ঢাকা গড়ে উঠছে। তাই বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলতে হলে সবারই সহযোগিতা লাগবে।

এজন্য দরকার সুপরিকল্পিত পরিকল্পনাও।
 
রোববার (৪ অক্টোবর) বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া এ কথা বলেন।

রাজধানীর কলাবাগানে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) কার্যালয়ে সংগঠনটির উদ্যোগে ‘সর্বজনীন এলাকা: সবার ব্যবহারের অধিকার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করা হয়। বুয়েটের সাবেক উপচার্য্য ড. এম এম সফিউল্লাহ এতে সভাপতিত্ব করেন।

জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া বলেন, ঢাকা শহর গড়ে ওঠার শুরু থেকেই ছিল সুপরিকল্পনার অভাব।

বাসযোগ্য শহর গড়ে তুলতে না পারার ব্যর্থতাও স্বীকার করেন তিনি। উদাহরণ দিয়ে বলেন, মনে করুন অপরিকল্পিতভাবে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ হচ্ছে। ওই ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে কমপক্ষে ১০ মাস লাগছে। এরমধ্যে কি একদিনও পরিদর্শন কর্মকর্তা সময় পাননি ওই ভবনটি পরিদর্শন করার? এজন্য বলা যায়, সবার যোগসাজশেই অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণসহ নানা কাজ চলছে।

রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে অবশ্যই বাসযোগ্য শহর হিসেবে ঢাকাকে গড়ে তোলা সম্ভব।
 
আলোচনা সভার শুরুতেই মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পবার নির্বাহী সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। এসময় তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক্সিডেন্ট রিচার্স ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ঢাকার সড়কে পথচারীদের ‍মৃত্যুর তথ্য জানান।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নিহতদের মধ্যে শতকরা ৭২ ভাগই পথচারী। ২০১১ সালে ঢাকার সড়কে এক হাজার ৮০০ জনের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর পেছনে দায়ী অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা নগর।
 
সভায় আইনজীবী শাহদীন মালিক বাসযোগ্য শহর গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে মূল বাজেটের একটা বড় অংশ স্থানীয় সরকারের জন্য বরাদ্দ থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে তা থাকে না। উন্মুক্ত জায়গাগুলো সংরক্ষণ করতে হলে অবশ্যই স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে।
 
সভায় বক্তারা বলেন, উন্মুক্ত জায়গা নিশ্চিত করতে না পারলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ তেমন ফলপ্রস হবে না। পরিবেশের দিকে খেয়াল না রেখে আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি, যা ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
 
বক্তারা আরও বলেন, উন্মুক্ত জায়গা সংরক্ষণে যে আইন আছে তা মানা হচ্ছে না। উন্মুক্ত জায়গা দখল, নষ্টসহ অরক্ষিত হওয়ার পেছনে যারা দায়ী, তাদের শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। যারা কাজে গাফিলতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে উন্মুক্ত জায়গা সংরক্ষণ করা অনেক সহজ হবে।
 
সভায় স্থানীয় জনগণের মত নিয়ে এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদন, কমিউনিটিভিত্তিক স্থানীয় সরকার গঠন, আইন মানতে বাধ্য করা, পরিবেশ সহায়ক বিভিন্ন কর্মসূচিগ্রহণসহ নানা পরামর্শ দেন বক্তারা।
 
পবার পক্ষ থেকে সভায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য, কল্যাণ, মঙ্গল এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যমান সর্বজনীন এলাকা সংরক্ষণ, দখলকৃত পার্ক ও খেলার মাঠ এবং দখল ও ভরাটকৃত লেক পুনরুদ্ধার, সর্বজনীন এলাকা বিশেষ করে ফুটপাত, রাস্তা, পার্ক, খেলার মাঠ, শিশু ও নারী, বয়স্ক ও অসামর্থ্য ব্যক্তিদের ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি, সর্বজনীন এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
একে/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।