ময়মনসিংহ: ট্রাইব্যুনালের আদেশ লঙ্ঘন করা ও বিচারিক কার্যক্রমকে বিলম্বিত করার দায়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের।
রোববার (০৪ অক্টোবর) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ নম্বর আমলী আদালতে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন-২০০১ এর ৩২ (গ) ধারা, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ১৬৬/২০৪/২২৮ ধারায় তিনি বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আরজিতে তিনি উল্লেখ করেন, অর্পিত ১৫৭/২০১২ নম্বর মামলার বিচার্য বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বর্তমান মামলা সংশ্লিষ্ট ৮ (ক) ৭৩-৭৪ নং ভিপি মামলার নথি প্রয়োজন হওয়ায় আসামি মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকীর দফতর হতে নথি তলব করা হয়।
পরে ভিপি মামলার নথিটি উপস্থাপনের জন্য ২৮ এপ্রিল তারিখ ধার্যক্রমে ২২ এপ্রিল ১৩ নং স্মারকে মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকীর অফিসে পাঠানো হয়। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের আদেশ মতে নথি উপস্থাপন না করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কর্তৃক স্বাক্ষরিত স্মারকে জানানো হয় যে, তলবকরা ভিপি মামলার নথিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবং নথি খুঁজার জন্য তিনি এক মাস সময় প্রার্থনা করেন।
পরবর্তীতে ৮টি ধার্য তারিখ তলবী নথি উপস্থাপনের জন্য নির্ধারণ করা হলেও মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী ট্রাইব্যুনালের তলবমতে নথি পাঠয়নি। কিংবা নথি না পাঠানোর বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যাও দেননি।
মামলার আরজিতে আরো বলা হয়, পরবর্তীতে মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকীকে ট্রাইব্যুনালের আদেশ প্রতিপালন না করায় এবং ট্রাইব্যুনালের কাজে সহায়তা না করার কারণে কেন সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যধারা রুজু করা হবে না তার কারণ লিখিতভাবে ট্রাইব্যুনালকে জানানোসহ মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকীকে ২৩ আগস্ট তলবকরা নথিসহ সশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হবার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী নির্ধারিত তারিখে ট্রাইব্যুনালে নথি জমা দেননি এবং সশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজিরও হননি। তবে একটি স্মারকে ফারুকী ট্রাইব্যুনালকে জানান যে, তার দফতরের মুভমেন্ট রেজিস্ট্রারে ওই নথির বিষয়ে কোনো এন্ট্রি না থাকায় তিনি নথির বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না।
বাদী তার আরজিতে বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে ধার্য তারিখের পরেও তলবী নথি পাঠানোর জন্য বার বার মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকীকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের আদেশ লঙ্ঘন করার মাধ্যমে আসামি বিচারিক কার্যক্রমকে বিলম্বিত করেছেন।
তিনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকের কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছেন। ফলশ্রুতিতে মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০’র ২২৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তার এহেন কর্মকাণ্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থনায় বিজ্ঞ আমলী আদালতে নালিশি দরখাস্ত দাখিল করা হলো।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী সরকারি সফরে বিদেশ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হারুণ অর রশিদ জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
এসএইচ