ঢাকা: দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন উল্লেখ করে কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই। আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’।
সোমবার (০৫ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় নাগরিক সংবর্ধনার জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ পদক এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক ‘আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ নাগরিক সংবর্ধনা দেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়া এবং ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার ছোট ছোট সন্তানদের মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে বাংলার মানুষের কাছে ফিরে এসেছিলাম একটাই লক্ষ্য নিয়ে যে, এদেশের মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করবো’।
জীবনের সব চাওয়া পাওয়ার উর্ধ্বে উঠে বাংলার মানুষকে ভালোবেসেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেভাবেই ভালোবাসতে শিখেছিলাম বাবার কাছ থেকে। সেই ভালোবাসা দিয়ে গড়তে চেয়েছি বাংলার মানুষের জন্য একটা উন্নত দেশ।
তিনি বলেন, এই বাংলার মানুষের মাঝে আমি খুঁজে পেয়েছি আমার হারানো মা-বাবার স্নেহ, ভাইয়ের ভালোবাসা। বাংলার মানুষের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে আমি সদা প্রস্তুত।
![](files/October2015/October05/PM001_524825036.jpg)
বিজয়ী জাতি মাথা নিচু করে চলবে, তা কখনো হতে পারে না। বাঙালি যাতে বিশ্বসভায় যেন মর্যাদার আসন পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। এই বাংলার মাটিতে মানুষ ক্ষুধার জ্বালায় ধুঁকে ধুঁকে মরবে, রোগে চিকিৎসা পাবে না, মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে না, অন্ন বস্ত্র পাবে না, এটা তো হতে পারে না।
বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশ রক্ষায় যা যা করণীয় সরকার তা করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের উন্নয়ন করতে গেলে স্বাভাবিকভাবে পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়ে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে মানুষ যাতে উন্নত জীবন পায়, সে পরিকল্পনা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা যে শুধু সরকার গঠন করার পর করছি তা নয়। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সেই ১৯৮৩ সাল থেকে সারা বাংলাদেশে কৃষক লীগের মাধ্যমে আমরা সেসব কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি।
শিশুদের জন্য সুন্দর বাস উপযোগী সুজলা সুফলা বাংলাদেশকে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, কারো প্রতি মুখাপেক্ষী হয়ে নয়, কারো কাছে ভিক্ষে চেয়ে নয়, আমাদের নিজেদের যতোটুকু সম্পদ আছে তার যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে এদেশের উন্নয়ন আমরা করবো।
সীমিত সম্পদ দিয়ে আমরা নিজেরা নিজেদের অর্থ দিয়ে কার্যক্রম শুরু করি। যা আজ বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত।
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে সবাইকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করতে একটি কবিতার অংশবিশেষ আবৃত্তি করে তার বক্তব্য শেষ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই, ওরে ভয় নাই, নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই, তার ক্ষয় নাই’।
নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ডিসপ্লে পরিবেশন করা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন গানের সঙ্গে গলা মেলাতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অ্যামিরেটাস প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মুস্তাফা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৫
এমইউএম/এএসআর
** সোনার বাংলা গড়তে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত
** কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলার জনগণকে
** সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনা শুরু