খুলনা : মিনার ঘটনার পর থেকে বাবার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। মোয়াল্লেম (যার নেতৃত্বে হজে গেছেন) তিনিও জানেন না।
এসব কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন মিনা ট্র্যাজেডিতে নিখোঁজ খুলনার মোঃ কেরামত আলীর ছোট মেয়ে শারমিন।
বুধবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর পশ্চিম টুটপাড়া মওলার মোড় ইসলামিয়া ৪র্থ গলিতে তাদের বাড়িতে কথা হয় মোঃ কেরামত আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।
নিখোঁজ মোঃ কেরামত আলী কোথায় কি অবস্থায় আছেন তা জানতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তার স্বজনেরা। সবার একটাই আকুতি, সন্ধান চাই, জীবিত অথবা মৃত।
মিনায় শয়তানকে পাথর মারতে গিয়ে পদদলিত হয়ে হাজারো হাজি হতাহতের ঘটনার পর থেকেই মোঃ কেরামত আলীর বাড়িতে কান্নার রোল লেগেই আছে। বাড়ির সবাই হতাশ হয়ে পড়েছেন। একজনকে প্রবোধ দেওয়ার মতো অবস্থা নেই অন্যজনের। বিভিন্ন স্থান থেকে খোঁজ নিতে ছুটে আসছেন পরিচিত ও স্বজনেরা।
কেরামত আলীর স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, সৌদি আরবে গিয়েও তিনি দেশে পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটা ২৩ মিনিটে খুলনায় তার স্বজনদের সঙ্গে শেষবার কথা বলেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত তার কোনো খবর আমরা জানি না। মিনার ঘটনার পরে তার ভাগ্যে কি ঘটেছে, বেঁচে আছেন কি-না সেটিও পরিবারের কেউ জানেন না।
তিনি জানান, বাংলাদেশ হজ মিশন, হজ রিক্রূটিং অফিস, মোয়াল্লেমসহ কারো কাছ থেকে হাজি কেরামত আলীর কোনো সন্ধান তারা পাচ্ছেন না। তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল ছিলেন।
তিনি বলেন, কেরামত আলী ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার। এক বছর আগে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলে সবাইকে বিয়ে দিয়ে তিনি এ বছর হজ করতে যান।
মোঃ কেরামত আলীর ভায়রা ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, কেরামত আলী ঢাকার সালেহিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড টুরস (হজ লাইসেন্স নং ৫০৮) এর তত্ত্বাবধানে খুলনার হেরাজ মার্কেটে সিরাজা মনিরা এয়ার ওভারসিজ নামক হজ রিক্রুটিং অফিসের মাধ্যমে এ বছর হজে যান। তার মোয়াল্লেম ছিলেন আজিজুর রহমান (মোয়াল্লেম নং ৭০)। তার পাসপোর্ট নং বিএ০৮৭৫৩৫ এবং সৌদি আরবে ব্যবহৃত মোবাইল নং +৯৬৬৫৬১৮৮৬১২৯।
তিনি বলেন, মোয়াল্লেম আজিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কেরামত আলীর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ মোঃ কেরামত আলীর সন্ধান পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তার স্বজনরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর