ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের কাছে জিম্মি নির্বাচন কমিশন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৫
টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের কাছে জিম্মি নির্বাচন কমিশন

ঢাকা: ভোটার আইডি প্রকল্পে নিজস্ব কোনো জনবল না থাকায় বর্তমানে টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্সপার্টদের খামখেয়ালিপনায় সকাল থেকেই ভোগান্তির শিকার হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সেবাগ্রহীতারা।


 
বুধবার (০৭ অক্টোবর) সকাল থেকে হঠাৎ করে কর্ম বিরতিতে যান ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগের অধীনে আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা।
 
এ সময় তারা সার্ভারও বন্ধ করে রাখেন। ফলে দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সেবাগ্রহীতাদের। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো কূল-কিনারা না হওয়ায় ফিরে যান।
 
এ বিষয়ে এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই প্রকল্পের টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা কাজ বন্ধ রাখেন। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন।
 
তিনি বলেন, তারা ভুল বুঝে কর্মবিরতিতে গেছেন। সরকার টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের বেতন বাড়ায়নি। এজন্য তারা বেতন বাড়ানোর দাবি জানাতে পারেন। কিন্তু আগাম কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করা উচিত হয়নি।
 
সুলতানুজ্জামান বলেন, ওই কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ একটা ভুল মেসেজ দিয়েছে, বেতন বাড়ানো হচ্ছে না। তাই তারা এমন করেছেন।

বিকেলের দিকে এনআইডি মহাপরিচালক কর্মবিরতিতে যাওয়া কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আশস্ত করলে তারা কাজে যোগ দিতে সম্মত হন। কিন্তু কেউ কাজে যোগ দেননি।
 
সুলতানুজ্জামান আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। কেননা, তারা সাত বছর ধরে এই প্রকল্পে কাজ করছেন। আর তাদের চাকরি হচ্ছে চুক্তিভিত্তিক। এরপরও আমরা তাদের চাকরির মেয়াদ সময় সময় বাড়িয়েছি। বেতনও বাড়ানো হবে। কিন্তু এভাবে কেউ কাজ বন্ধ রাখতে পারে না। কারো ভালো না লাগলে চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন।
 
ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তিভিত্তিক লোকবল দিয়ে কাজ চালানোর কারণেই এনআইডি প্রকল্পের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রকল্পের ওইসব লোকবলের চাকরির প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাও নেই। ফলে তারা হরহামেশায় খামখেয়ালিপনা করেন। এছাড়া সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত করেন।
 
সূত্র জানায়, সর্বশেষ সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার আগ মুহূর্তে এই কর্ম বিরতি ইচ্ছা করে হয়েছে। দোষীদের বাঁচাতেই কর্মবিরতির নামে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। কেননা, হঠাৎ করে কোনো কর্মসূচি হয় না।
 
গত ১৯ আগস্ট বেসরকারি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার জিএম মুস্তাফিজুল আলম ও  সিনিয়র ক্যামেরা পার্সন রিপু আহমদকে সংবাদ সংগ্রহের সময় মারধর করে টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের হুকুম দাতা হিসেবে ইতিমধ্যে তৎকালীন আইডিইএ প্রকল্পের উপ পরিচালক আব্দুল বারীকে অপসারণ করা হয়েছে।
 
এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে সুলতানুজ্জামান বারবার ফোনে তাগাদা দিলেও সার্ভার চালু করেনি কর্ম বিরতিতে যাওয়া চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তারা। বরং ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে নানা সমস্যার অজুহাত দেখানো হচ্ছিল।

এ সময় সুলতানুজ্জামান বলেন, তাদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
 
সুলতানুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশান নেওয়া মতো কিছু হয়নি। তেমন হলে অ্যাকশান নেওয়া হবে।
 
তাদের কাছে ইসি জিম্মি কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, জিম্মির বিষয় না। কেননা, একটা মিস ইনফরমেশনের কারণে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।

আশা করি এটা থাকবে না। এছাড়া তারা ভুল স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছে। কাজে যোগদানেরও কথা বলেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৫
ইইউডি/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।