ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জনপ্রশাসনে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৫
এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জনপ্রশাসনে

ঢাকা: সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকদের বিরুদ্ধে আনীত নানা অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করার সুপারিশ করেছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।

কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, উপ সচিব মো. ঈশান আলী রাজা বাঙালী ও যুগ্মসচিব মো. শহীদুল ইসলাম।

তদন্ত কমিটি সংসদীয় কমিটিকে পাশ কাটিয়ে অন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

তদন্ত কমিটি গত ২০ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। যার স্মারক নং ৪৬.০৭০.০৮৭.০০.০০.১৭০.১১-৫৬০, তারিখ ২২ জুন ২০১৫। পরে এই প্রতিবেদনের একটি কপি বুধবার সংসদীয় কমিটিতে দেয় তদন্ত কমিটি। যার একটি কপি বাংলানিউজের কাছে এসেছে।
 
বুধবার (০৭ অক্টোবর) সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকদের দায়িত্ব পালনকালীন বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ পায়। তবে ওই অভিযোগ দুই একজন প্রশাসকের বিরুদ্ধেই গেছে। বাকিদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েই প্রতিবেদন দিয়েছে। একই সাথে সব প্রশাসকের সঙ্গে কথা না বলায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছে সংসদীয় কমিটি। একই সঙ্গে প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পাঠানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিটি। যেটিকে অসম্পূর্ণ প্রতিবেদনও বলেছে কমিটি।
 
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত করেছিলো মন্ত্রণালয়।
 
নিয়ম অনুযায়ী সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় কোনো কাজ করলে তা প্রথমে কমিটিকে জানাতে হয়।
 
বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
 
গত ১৬ জুন কমিটির  বৈঠকে নির্বাচিত দুই মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসকদের সময়কালের সব কার্যক্রম তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলে কমিটি।
 
অগাস্ট মাসে কমিটির বৈঠকে প্রশাসকদের মেয়াদকালে রাজস্ব আদায় নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয় মন্ত্রণালয়। ওই প্রতিবেদনটিও অসম্পূর্ণ বলে ফেরত পাঠায় কমিটি।
 
বুধবারের বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উত্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তদন্ত প্রতিবেদন বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জনানো হয়েছে। ’
 
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা জানান, কমিটি প্রতিবেদনটি ফেরত পাঠিয়েছে।
 
কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, যে কমিটি সুপারিশ করবে তার কাছে প্রতিবেদন দিতে হবে। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগ কমিটিকে না জানিয়েই সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। প্রতিবেদেনটি কমিটি প্রত্যাখান করেছে। একই সঙ্গে আবার তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
 
ওই সদস্য আরও জানান, মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে ১৭ জন প্রশাসকের মধ্যে নয় জনের বক্তব্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি শোনেনি।
 
কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
 
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাইরের যেসব ইউনিয়নগুলোতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে সেগুলোকে সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
 
এছাড়াও বৈঠকে সিটি কর্পোরেশনের নামে বাজেট বরাদ্দের অতিরিক্ত কোনো প্রকল্প গ্রহণ না করার সুপারিশ করা হয়।
 
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত যেসব সমিতির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
 
এছাড়া রাজধানীর মিরপুরে চিড়িয়াখানা রোডে জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতির নামে বরাদ্দকৃত ৫০ কাঠা জায়গার ওপর নির্মিত ১৬তলা ভবনের মালিকানা ডেভলপারকে ৮৪ ভাগ এবং সমিতির নামে ১৬ ভাগ কীভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে সে বিষয়ে পরের বৈঠকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপনের সুপারিশ করেছে কমিটি।
 
আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. রহমত আলী, সাবের হোসেন চৌধুরী, ফজলে হোসেন বাদশা এবং  রহিমা আখতার অংশ নেন।
 
স্থানীয় সরকার সচিব আবদুল মালেক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব এম এ কাদের সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৫
এসএম/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।