ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভিডিও কনফারেন্সে কাজিরবাজার সেতুর উদ্বোধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৫
ভিডিও কনফারেন্সে কাজিরবাজার সেতুর উদ্বোধন ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

সিলেট: আরেকটি স্বপ্নপূরণ হলো সিলেটবাসীর। সুরমার বুকে নির্মিত কাজিরবাজার সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরই মধ্য দিয়ে উন্মেচিত হলো যোগাযোগের নতুন দ্বার। সেতুবন্ধন হলো সুরমার উত্তর দক্ষিণের বাসিন্দাদের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৭মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাজিরবাজার সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সময়ে  ৪৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন তিনি।

সিলেট জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন। এ সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত দেশের বাইরে থাকায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে তার পাঠানো একটি ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় আক্ষেপ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, সিলেটের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার এমপি আল আমিন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
 
এর আগে গত ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেটের কুশিয়ার নদীর ওপর নির্মিত চন্দরপুর-সুনামপুর সেতু ও সুনামগঞ্জে সুরমার ওপর নির্মিত সুরমা সেতুসহ দেশের বিভিন্ন  জেলায় নয়টি সেতু উদ্বোধন করেন।

সওজ সূত্র জানায়, কাজিরবাজার পিসি গার্ডার সেতুর উপর দৈর্ঘ্য ৩৯১ মিটার। ১৮ দশমিক ৯০ মিটার প্রস্তের সেতুটির স্পেন সংখ্যা ১০টি। রয়েছে ৯টি পিয়ার ও ২টি এবাটমেন্ট। সেতুর উভয় দিকে অ্যাপ্রোচ সড়ক রয়েছে ৮৬৫ মিটার। এর মধ্যে সেতুর উত্তর প্রান্তে ২৩০ মিটার ও দক্ষিণ সুরমা প্রান্তে রয়েছে ৬৩৫ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক। পাইল ফাউন্ডেশনের উপর নির্মিত পিসি গার্ডার এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তÍর স্থাপন করা হয় ২০০৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর।

তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা এর ভিত্তিস্থাপন করেছিলেন।

প্রাথমিকভাবে ৪৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে সম্পন্নের কথা ছিল। সেতুর কাজ চলমান থাকাকালে ওয়ান ইলেভেনের সময় হঠাৎ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সেতুর কাজ পুনরায় শুরু করে। এজন্যে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। প্রকল্প ব্যয় বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে তা দাঁড়ায় ১৮৯ কোটি ৭ লাখ টাকায়। এ সময় নগরীর শেখঘাটে ঐতিহ্যবাহী জিতু মিয়ার বাড়ি রক্ষা করার জন্য সেতুর নকশা বদলও করা হয়। এ ছাড়া সেতুর দৈর্ঘ্য বাড়ানো হয় ২৫ মিটার। সে সময় ব্যয়ও বাড়ে।

তবে শেষ পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ১২৪ কোটি টাকা। অবশ্য এজন্য সেতুর প্রস্থ ১৯ মিটার থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক ৪ মিটার করা হয়। তবে দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ৩৯১ মিটারে উন্নীত করা হয়। সেতুটির নির্মাণ কাজ হওয়ায় প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক পর্যটক সেতু দেখতে ছুটে যাচ্ছেন।

সেতুর নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বেশ কয়েকবার সেতু পরিদর্শন করেন জানায় সওজ সূত্র।  

২০১৪ সালের বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে সেতুটি উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা হয়নি। তিন দফা তারিখ পেছানোর পর অবশেষে প্রধানমন্ত্রী সেতুটির উদ্বোধন করেন।

অন্যদিকে ৯ বছর ধরে বেহাল দশায় রয়েছে সিলেটের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ। সড়কটির উন্নয়নে উপজেলাবাসীর দাবি দীর্ঘদিনের। গত বছরে যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়কটিকে ক্যান্সার আক্রান্ত বলে আখ্যায়িত করেন। এ অবস্থায় রাস্তাটি জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করে গত ৭ এপ্রিল ৪৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে প্রকল্পটির দরপত্র আহবান করা হয়েছে। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। আগামী ৩ বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে জানায় সওজ সূত্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৫
এনইউ/এএএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।