ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অ্যালকোহল-কেমিক্যালযুক্ত এনার্জি ড্রিংকস নিষিদ্ধ করছে সরকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৫
অ্যালকোহল-কেমিক্যালযুক্ত এনার্জি ড্রিংকস নিষিদ্ধ করছে সরকার ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: বাজারে প্রচলিত এনার্জি ড্রিংকসের বেশির ভাগেই অতিরিক্তমাত্রায় অ্যালকোহল (মাদকদ্রব্য) ও অন্যান্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল রয়েছে।

এসব ড্রিংকস ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে সরকার।

পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের ১৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেলা ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সভা।

এছাড়া রাজধানীর গুলশান, বানানী, মহাখালী, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার সিসাবারগুলোও বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রী জানান, এসব বারে সিসার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মাদক মিশিয়ে নেশা করা হয়। যা নিরুৎসাহিত করা হবে। সিসাবারে নোটিশ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের আলোচনায় উঠে এসেছে- বাজারে যেসব এনার্জি ড্রিংকস প্রচলিত আছে তাদের মধ্যে অতিমাত্রায় অ্যালকোহল-কেমিক্যাল এবং অন্য ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। সে জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- মাদকদ্রব্যের ল্যাবরেটরি ছাড়াও আরও দু’টি ল্যাবরেটরিতে অ্যালকোহলের মাত্র এবং ক্ষতিকর কেমিক্যালের উপস্থিতি পরীক্ষা করে পাওয়া গেলে এগুলো বন্ধ করে দেবো। নিষিদ্ধ করে দেবো।
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল বলেন, সিসা একটি ফ্যাশন হয়ে গেছে। সিসা খাওয়ার প্রবণতা আমাদের যুব সমাজের মধ্যে এসে গেছে। যুব সমাজের কাছে পপুলার হয়ে গেছে এটি। সিসাক্লাব বা সিসাবারগুলোতে গাঁজা, ইয়াবা ও হেরোইন ব্যবহার করা হয়। আমরা এগুলো নিরুৎসাহিত করবো। যতগুলো সিসাবার আছে সবগুলোকে আমরা নোটিশ দিয়ে দেবো বন্ধ করার জন্য। বারে যারা মাদক মিশ্রিত ধূমপান করবেন তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হবে।
 
মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সভার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা যেন সীমান্তের কাছে ফেন্সিডিল উৎপাদন না করে। তারা কথা রেখেছে। এক বছরে ফেন্সিডিলের ব্যবহার অর্ধেকে নেমে এসেছে।
 
তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, সমজিদ ও বাজারে মাদক নিরুৎসাহিত করতে এক মাস প্রচারণা চালানো হবে। মাদক সেবনকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
 
পথ শিশুদের মাদকমুক্ত করে সুস্থজীবনে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, বোর্ড সভায় আমাদের টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছেন- দেশের পথশিশুরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তারা ঘুমিয়ে পড়লে তাদের অজ্ঞান করে রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে নিয়ে রক্ত নিয়ে নেওয়া হয়। এ বিষয়টি আমার আসলেই জানা ছিল না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাদকাসক্ত পথশিশুদের চিকিৎসা করে তাদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা হবে।
 
পথশিশুরা কোনো ধরনের বিপদে না পড়ে সেদিকে আমরা নজর রাখবো। এ কাজে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও এনজিওসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা চাইবো।
 
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদমানকিনসহ সাতজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাংবাদিক প্রতিনিধি মনজুরুল আহসান বুলবুল, চিকিৎসক প্রতিনিধি প্রাণ গোপালসহ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৫, আপডেট ১৮২০
এসএমএ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।