মাগুরা: স্বামী ও শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে নিজের ও সন্তানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন অনিমা বিশ্বাস (১৮) নামে এক গৃহবধূ।
এতে তার আট মাসের কন্যা শিশুটি মারা যায় এবং গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন অনিমা বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে মাগুরার শালিখা উপজেলার নূরপাড়া গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী লিপি বিশ্বাস বাংলানিউজকে জানান, নূরপুর গ্রামের স্বপন বিশ্বাসের ছেলে কৃষি শ্রমিক সুমন বিশ্বাসের সঙ্গে দুই বছর আগে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গ্রাম ঝিনাইদহ জেলার বামনাইল গ্রামের গৌতম বিশ্বাসের মেয়ে অনিমার। এক বছর আগে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে ছোটখাট বিষয় নিয়ে স্বামী সুমন ও শাশুড়ি মনিমালা বিশ্বাস অনিমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করত। সম্প্রতি তা চরম আকার ধারণ করে।
একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনিমা তার শিশু কন্যা শ্রুতিকে নিয়ে ঘরের ভেতর ধান রাখার বাঁশের তৈরি ডোলের মধ্যে গিয়ে কেরোসিন তেল ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে শিশুটির সারা দেহ দগ্ধ হয় ও অনিমার শরীরের শ্বাসনালীসহ ৮০ ভাগ পুড়ে যায়।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে শিশুটির মৃত্যু হয়। গুরুতর দগ্ধ অনিমা বিশ্বাস হাসপাতালের বারান্দায় মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।
ডা. অমর প্রসাদ বাংলানিউজকে বলেন, অনিমা বিশ্বাসের শরীরের ৮৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অনিমার স্বামী ও শ্বাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৫
আরএ