খুলনা: যশোরের একটি আবাসিক হোটেলে মাদক ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনকে হত্যার দায়ে তার সহযোগী তিন মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আশাশুনি গ্রামের মিরাজ আলীর ছেলে নাজমুল হক (২৭), খুলনা মহানগরীর রসানাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা এলাকার নুরুল হকের ছেলে আব্দুল্লাহ ওমর ফারুক লাবলু (২৫) ও খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার শিরগাতি গ্রামের রুস্ত আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বাবু (২৫)। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক বাবু পলাতক এবং অপর দুইজন রায় ঘোষণার সময় আসামির কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট এনামুল কবীর জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৩০২ ধারায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, ২০০০ সালের ১ মার্চ যশোরের খুলনা বাসস্ট্যান্ডের কাছে কেকো নামে একটি আবাসিক হোটেলে ছদ্মনাম ব্যবহার করে মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ ওমর ফারুক লাবলু ও বিল্লাল হোসেন ৪১৭নং কক্ষ ভাড়া নেন। একই হোটেলের ৪১৪নং কক্ষ ভাড়া নেন নাজমুল হক ও আব্দুর রাজ্জাক বাবু। হেরোইন বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনজনে মিলে বিল্লাল হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরদিন সকালে ওই তিনজন হোটেলে থেকে কৌশলে পালিয়ে যান।
৩ মার্চ হোটেল বয় বিদ্যুৎ আলী রুমের ভাড়া আনতে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান। এবং রুম থেকে দুর্গন্ধ টের পেয়ে হোটেল ম্যানেজারকে জানান। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে খুলে রুম খুলে বিল্লালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় যশোরের কোতোয়ালি থানার এসআই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পত্রিকায় সংবাদ ও ছবি দেখে বিল্লাল হোসেনের ছোট ভাই নুরুল ইসলাম পুলিশকে নিশ্চিত করেন, নিহত ব্যক্তিটি তার ভাই বিল্লাল।
এরপর ময়না তদন্ত রিপোর্ট এবং নাজমুলকে গ্রেফতার ও তার স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়। অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোরের কোতোয়ালি থানার এসআই লোকমান হোসেন ২০০২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে তিনজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গত ১৫ মার্চ এ হত্যা মামলাটি যশোর থেকে খুলনার ট্রাইব্যুনালে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর