ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সমাজের অনিয়ম রোধেও মীনা’র প্রয়োজন ‍

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
সমাজের অনিয়ম রোধেও মীনা’র প্রয়োজন ‍ ছবি: জি এম মুজিবুর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শিশুশিক্ষার প্রসার, বাল্যবিবাহ রোধ, জেন্ডার বৈষম্য বিলোপে মীনা’র ভূমিকা সবার জানা। সমাজের ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম দূর করতেও এমন চরিত্রের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. মোস্তাফিজুর রহমান।



শনিবার (১০ অক্টোবর) সকালে আগারগাঁও এলজিইডি মিলনায়তনে ‘মীনা দিবস-২০১৫’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

দিবসটি প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর পালিত হয়। অনিবার্য কারণে এবার সেদিন অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা যায়নি বলে জানান মন্ত্রী।

এবারের দিবসে প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে, ‘কন্যাশিশু বিয়ে দিয়ে করো নাকো ভুল, প্রত্যেকটি শিশু যেন এক একটি ফুল’।

বিভিন্ন স্কুল থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, শিশুদের শিক্ষার প্রসারে, বাল্যবিবাহ বন্ধে, ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বৈষম্য কমাতে মীনা ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এমন চরিত্র আরও তৈরি করতে হবে। সমাজের স্তরে স্তরে যে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম রয়েছে, সেগুলো দূর করতে মীনা’র মতো চরিত্র আরও প্রয়োজন।

মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকা রাখছেন। প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা), স্পিকারসহ (ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী) গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে। কোথাও পিছিয়ে নেই মেয়েরা, বরং এগিয়ে আছে।

তিনি বলেন, ফলাফলের দিকে মেয়েরা ভালো করছে। তাদের মনোনিবেশ ছেলেদের চেয়ে কম নয়। এভাবে এগোলে ২০ বছর পর দেশ কোথায় যাবে- ভেবে আশায় শিহরিত হই।

শিক্ষকদের আন্দোলন না করে ধৈর্য ধরে তাদের দায়িত্ব পালনের তাগিদ দেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, মাথা ঠাণ্ডা রেখে আমাদের সন্তানদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারলে আমরা অনেক দূর এগোতে পারবো। শিক্ষকদের বলবো, চোখ বন্ধ করে নিজেদের দায়িত্বের কথা ভাবুন। নিজেদের কাজ বাড়িয়ে দিন। গত বছর যা করেছেন, এ বছর আরও বাড়ান।

তিনি বলেন, পে-স্কেল বা উৎসব‍ ভাতা কোনো আন্দোলনের কারণে আসেনি, এমনিতেই এসেছে। কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন অনেকে। আগামী দিনে আপনারাও তা পাবেন। তাই আপনারা মনোযোগ দিয়ে আপনাদের কাজগুলো করুন।

মন্ত্রী বলেন, শিশুদের স্কুলে নিয়েছে মীনা, কিন্তু পাঠদান করবেন শিক্ষকরা। তাই তাদের ভূমিকা অনেক।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফ’র বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের প্রতিনিধি এডোয়ার্ড বেগবিদার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল জলিল প্রমুখ।

বেগবিদার বলেন, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি সচেতনতা তৈরি করেছে মীনা। জেন্ডার বৈষম্য বিষয়টি নিয়েও মানুষকে সচেতন করেছে, যাতে বৈষম্য না থাকে। শিশুদের লেখাপড়া বিশেষ করে মেয়েশিশুর শিক্ষায় মীনা’র অবদান অনেক।

তিনি বলেন, শিশুশিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ নিরোধ, ছেলে-মেয়েদের মধ্যকার বৈষম্য বিলোপ নিয়ে মীনা সফল একটি পদচারণা চালিয়েছে।

মীনা ২৫ বছর ধরে মেয়েশিশুর অধিকারে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বেগবিদার বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের বিশেষ করে মেয়েদের এমন যোগ্য করতে চায় মীনা, যা বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে মেয়েদের ভূমিকা বাড়াতে ও স্বীকৃত করতে পারে।

১৯৯১ সালে ১০ বছর বয়সী বালিকা হিসেবে মীনা চরিত্রের সৃষ্টি। সমাজের কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, বিভেদ, বৈষম্য দূর করতে বিভিন্ন বার্তা উপস্থাপন করে আসছে মীনা। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল তথা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েশিশুদের প্রতিনিধিত্ব করছে এ চরিত্রটি।

মীনা কার্টুন পর্ব ও মীনা বই সব বয়সীদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।

১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী দিবসটি পালন করে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা। প্রতিবারের মতো জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র্যালি, মীনা বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, যেমন খুশি তেমন সাজো কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে এবারও।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এসকেএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।