ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কবি দিলওয়ারের তৃতীয় প্রয়াণ দিবস শনিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
কবি দিলওয়ারের তৃতীয় প্রয়াণ দিবস শনিবার কবি দিলওয়ার

সিলেট: ‘‘পদ্মা-মেঘনা সুরমা যমুনা গঙ্গা কর্ণফুলী, তোমাদের বুকের আমি নিরবধি গণমানবের তুলি’’ নিজের আত্মপরিচয়কে এভাবেই তুলে ধরেছিলেন কবি দিলওয়ার।

সিলেটের প্রাণ ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম সাক্ষী লর্ড ক্বীন কর্তৃক নির্মিত ক্বীনব্রিজকে নিয়ে লিখেছিলেন ‘ক্বীনব্রিজের সূর্যোদয়’।

তার কবিতায় স্বত:স্ফূর্তভাবে উঠে এসেছে সাধারণ মানুষের কথা। আর এ জন্যই সিলেটের মানুষের কাছে তিনি ‘গণমানুষের কবি’।

আজ শনিবার (১০ অক্টোবর) একুশে পদকপ্রাপ্ত এই কবির তৃতীয় প্রয়াণ দিবস। ২০১৩ সালের এই দিনে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলা নিজ বাড়িতে কবির জীবনাবসান হয়। বাড়ির পাশেই শায়িত করা হয় কবিকে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর।

পঞ্চাশের দশকের শক্তিমান ও নিভৃতচারী এই কবি রাজধানী ঢাকার মোহ ত্যাগ করে সিলেটে চালিয়ে গেছেন নিরলস সাহিত্য সাধনা। জীবনের শেষদিনটি পর্যন্ত তিনি আঁকড়ে ছিলেন প‍ূণ্যভূমি সিলেটের মাটি। তার সাহিত্য চর্চায় প্রতিষ্ঠিত হয় কবি দিলওয়ার সাহিত্য পরিষদ।

দিবসটি উপলক্ষে ‘কবি দিলওয়ার পরিষদ’ কবিতাপাঠ ও স্মরণসভা-র আয়োজন করছে। শনিবার বিকাল ৩টায় কবির বাসভবনে এ অনুষ্ঠান শুরু হবে।

এছাড়া থাকবে কবির সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং কবির রুহের মাগফেরাত কামনা করে প্রার্থনা মাহফিল।

স্বাধীনচেতা ও সংগ্রামী জীবনের অধিকারী ছিলেন গণকবি দিলওয়ার। তিনি গ্রিক, রোম থেকে শুরু করে পুরাণকে তৃতীয় দৃষ্টির আলোকে প্রকাশ করেছেন তার কবিতায়। জীবনধর্মী-ইতিহাসবোধের কারণে তিনি প্রাগৈতিহাসিক কালকে টেনে আনেন তার কবিতায়। তিনি লিখেছেন, ‘সেই আদি অকৃত্রিম আকাশের নীচে/ ধূলো বালি ঘাসের ওপরে/ আমি আছি, সেই আমি জন্ম পরম্পরা থেকে/ যে আমি এখন মানুষ!’

কবি দিলওয়ারের জন্ম ১৯৩৭ সালে সিলেট শহরের সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত ভার্থখলা গ্রামে। তার পিতা মৌলভী মোহাম্মদ হাসান খান এবং মাতা মোসাম্মৎ রহিমুননেসা।

তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'জিজ্ঞাসা' প্রকাশিত হয় ১৯৫৩ সালে। তার গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে 'ঐক্যতান', 'পূবাল হাওয়া', 'উদ্ভিন্ন উল্লাস', 'বাংলা তোমার আমার', 'রক্তে আমার অনাদি অস্থি', 'বাংলাদেশ জন্ম না নিলে ' উল্লেখযোগ্য। এছাড়া প্রবন্ধ, গান, ও ভ্রমণকাহিনীও লিখেছেন তিনি।

কবি দিলওয়ার ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমী ফেলোশিপ এবং ২০০৮ সালে একুশে পদক পান। এছাড়া লাভ করেছেন অসংখ্য সম্মাননা ও পদক।

দীর্ঘ ৬০ বছরব্যাপী সাহিত্যের প্রায় সকল বিষয় নিয়ে লিখে গেছেন দিলওয়ার। সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে। সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এ দুটো বিষয় দিলওয়ারের বিভিন্ন লেখায় প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এএএন/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।