ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৫৩৪টি কোচ। যার মধ্যে ৪৫৬টি মিটারগেজ এবং ৭৮টি ব্রডগেজ।
নানা কারণে আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ এই কোচগুলো বাতিল করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১ হাজার ১৬৫টি মিটারগেজ (এমজি) যাত্রীবাহী কোচ রয়েছে। যার মধ্যে ৪৫৬টি কোচ আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ করেছে অর্থাৎ এসব কোচগুলোর তৈরির সময়কাল ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে। আরও ১৩৫টি কোচ তৈরি হয়েছে ৩১ হতে ৩৪ বছরের মধ্যে। সেগুলো খুবই নাজুক অবস্থায় চলাচল করছে।
অন্যদিকে ৩২৪টি ব্রডগেজ (বিজি) যাত্রীবাহী কোচের মধ্যে ৭৮টি কোচের আয়ুষ্কাল ইতোমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে করে বিজি ও এমজি মিলিয়ে আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৩৪টি কোচের।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে চাহিদার তুলনায় ২২৫টি বিজি কোচ কম আছে। বিদ্যমান কোচগুলো পুরনো মডেল ও ডিজাইনের। এ কোচগুলোর বর্তমান অবস্থা জরাজীর্ণ।
৫৩৪টি আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ কোচ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ফিরোজ সালাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের অনেক কোচ রয়েছে যেগুলো আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ হয়েছে। কোচগুলো মেরামত করা দরকার। সেজন্যই আমরা ২শ’টি মিটার গেজ কোচ মেরামত ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের কিছু কোচ আছে যেগুলো ব্যবহারের উপযোগী নয়। আবার কিছু কোচ আছে যেগুলো মেরামত করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, এ কোচগুলো মেরামত করে প্রতিটা ট্রেনে একটি দু’টি করে সংযোগ করবো। এর ফলে যাত্রীসেবার মান আরও বাড়বে। এছাড়া আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ কোচ ও যাত্রীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সামনে আরও কোচ সংগ্রহ করা হবে। আমাদের কিছু রেল ইঞ্জিন রয়েছে যেগুলো ৪০ থেকে ৫০ বছরের পুরনো। সেগুলোও মেরামত করা দরকার।
মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে লোকোমোটিভ ও ওয়াগন সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও দীর্ঘদিন ধরে উল্লেখযোগ্য হারে কোচ সংগ্রহ করা হয়নি। মিটারগেজ কোচের স্বল্পতা মেটাতে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছিলো। এছাড়া বাংলাদেশে রেলওয়েতে নতুন নতুন ট্রেন চালু করার জন্য যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করাও দরকার।
এসব কারণেই দুইশ’টি এমজি কোচ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে। ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২শ’টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় ১শ’টি এমজি কোচের জন্য বৈদেশিক কাঁচামাল এবং পার্টস সংগ্রহ করা হবে। পুনর্বাসন করা হবে বাকি ১শ’টি এমজি কোচ।
বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এমআইএস/আরআই/এএসআর