ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ৩২ লাখ কোটি টাকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক (২০১৫-২০২০) পরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনএসি)।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনএসি’র সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।



সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরকে ভিত্তি করে এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৩১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রাক্কলন করা হয়েছে। এতে এক কোটি ২৯ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

মোট বিনিয়োগের ৭৭ দশমিক তিন ভাগ আসবে বেসরকারি খাত থেকে, আর বাকি ২২ দশমিক সাত ভাগ সরকারি খাত থেকে আসবে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ও সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম সভায় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক-এর উপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। এসময় তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ, সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র নিরসনের সঙ্গে প্রতিটা নাগরিকের যাতে ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়, তা তুলে ধরা হয়েছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়। এজন্যই এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রতিপাদ্য হলো ‘প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ, নাগরিকের ক্ষমতায়ন’।

সভায় জানানো হয়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন ও জনগণের আয় বণ্টন ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য হারে উন্নীতকরণের লক্ষ্য অর্জনের উপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে অন্যতম কৌশল হবে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগে গতিশীলতা আনা। সর্বাধিক কর্মক্ষম জনসংখ্যাকে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলা।

সভায় আরও জানানো হয়, ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমে মূলধন ও শ্রমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, রফতানিমুখী বাণিজ্য ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ এবং সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে একটি টেকসই, সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু সহিষ্ণু ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।

‘এবারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। সমাজের সবস্তরের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। ’

‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গড়ে সাত দশমিক চার শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২৪ দশমিক আট ভাগ থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক ছয় ভাগে আনা হবে। রফতানি আয় ৩০ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২০ সালে ৫৪ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীতকরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। ’

এনইসি সভায় বলা হয়, সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপি’র দুই দশমিক শূন্য দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০২০ সালে জিডিপি’র দুই দশমিক ৩০ শতাংশে উন্নীত করা হবে। একইসঙ্গে এবারের পাঁচ বছরে এক কোটি ২৯ লাখ কর্মসংস্থান হবে।

‘গবেষণা কার্যক্রমকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে পরিকল্পনায়। গবেষণা ব্যয় জিডিপি’র শূন্য দশমিক ছয় ভাগ থেকে বাড়িয়ে এক ভাগে উন্নীত করা হবে। ’

‘মোট বিনিয়োগের ৯০ দশমিক চার শতাংশ অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে আহরণ করা হবে। বাকি নয় দশমিক ছয় শতাংশ বৈদেশিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে। মোট বিনিয়োগ বর্তমান জিডিপি’র ২৮ দশমিক নয় শতাংশ থেকে ২০২০ সালে জিডিপি’র ৩৪ দশমিক চার শতাংশে উন্নীত করা হবে। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি ২০২০ সালে পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশে কমিয়ে আনা হবে। এজন্য ২০২০ সাল নাগাদ রাজস্ব ও জিডিপি’র অনুপাত বর্তমানের ১০ দশমিক আট ভাগ থেকে বাড়িয়ে ১৬ দশমিক এক ভাগে উন্নীত করা হবে। ’

‘পাঁচ বছরের পরিকল্পনায় প্রতিটি খাত কার্যকরভাবে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের লক্ষ্যে ৮৮টি সূচক সম্বলিত একটি ফলাফল ভিত্তিক পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ মধ্যবর্তী ও সমাপ্ত মূল্যায়ণ প্রতিবেদন প্রণয়ন ও প্রকাশ করবে। ’

মঙ্গলবারের সভায় আরও জানানো হয়, ২০০৯ সালের ২৬মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে বাংলাদেশের প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১) প্রণয়ন করা হয়। এ প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় উল্লেখিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক এজেন্ডা দু’টো পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সে লক্ষ্যে ২০১১-১৫ মেয়াদে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০) প্রণয়ন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫/আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা
এমআইএস/জেডএফ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।